October 13, 2025, 1:05 pm
শিরোনামঃ
ঈশ্বরদীতে কুরিয়ারের পার্সেলের ভেতর থেকে সাড়ে ১৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার চট্টগ্রামে ১০ হাজার পিচ ইয়াবাসহ বাস চালক ও হেলপার গ্রেফতার টাঙ্গাইলে মা ইলিশ সংরক্ষণে মোবাইল কোর্টের অভিযান ; ৭ হাজার ৫০০ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে সুনামগঞ্জে ভূমিকম্প বিষয়ক মহড়া ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির পরপরই ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির আভাস টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে গবেষণায় অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ৩ জন হামাসকে সশস্ত্র থাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জীবিত সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়ে রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে হামাস ঝিনাইদের মহেশপুরে ঘর ভাঙ্গা ও যাতায়াতের রাস্তা দখল নিয়ে হিন্দু পরিবারের সাংবাদিক সম্মেলন ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতে যাওয়ার সময় ১৪ বাংলাদেশি আটক
এইমাত্রপাওয়াঃ

প্রার্থী ও এজেন্টের ভূমিকা ঠিক থাকলে কারচুপি ঠেকানো যায় : সিইসি

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যা যা করণীয় তা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের  দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের ব্যবস্থা করা এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালনের তাগিদ দেন তারা। বুধবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘অবাধ ভোটাধিকার, প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় সাবেক নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ দেশের বিশিষ্টজনরা ইসিকে এ পরামর্শ দেন। সাবেক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, প্রধান বিরোধীদল না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। তবে প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টেদের ভূমিকা যথাযথ হলে কারচুপি ঠেকানো সম্ভব। সাবেক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ভোটের পরিবেশ ঠিক করতে হবে এবং নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভালো নির্বাচনের অঙ্গীকার করতে হবে। আর নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যদি কারও গাফিলতি থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচন কমিশনের অগাধ ক্ষমতা আছে, এটা নিয়ে আরগুমেন্টও আছে। শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিকে অঙ্গীকার করতে হবে ভালো নির্বাচনের।

বিবদমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক ভোট নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। তবে সব দলকে ভোটে আনা ইসির দায়িত্ব নয়, এতে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা রয়েছে। কবিতা খানম বলেন, আমরা দেখছি বিরোধী দল ইসিকে সহায়তা করছে না। নির্বাচনের সঙ্গে শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, অনেকে রয়েছেন। অথচ কোনো সমস্যা হলো নির্বাচন কমিশন আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ায়। তিনি বলেন, পোলিং এজেন্ট দেওয়ার দায়িত্ব প্রার্থীর। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রার্থীকে উপযুক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। প্রার্থীকে পোলিং এজেন্টদের তালিকা ইসিতে পাঠানো দরকার। কিন্তু দেখা যায়, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার তথ্য আমরা পাই না। শুধু হাওয়ার ওপরে অভিযোগ দিলে তো হবে না। পোলিং এজেন্টদেরও নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বলেন, দেশের প্রধান দু’টি দল দুই মেরুতে। তাদের এক হতে হবে, তাহলে ভোট সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন সুন্দর করতে নিবন্ধিত সব দলকে এক করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে শক্ত অবস্থানে থেকে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, দলগুলো নিবন্ধিত হয় ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য। কিন্তু কোনো কারণে কোনো দল অংশ না নিলে করার কিছু থাকে না।

সিইসি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে, আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। পোলিং এজেন্টের ভূমিকা যদি যথাযথ হয়, তাহলে কারচুপি ঠেকানো সম্ভব। তিনি বলেন,  বৈধতার বিষয়টি নয় নির্বাচন কমিশন আইনগত দিকটা দেখবে। নির্বাচনে ‘লেজিটেমেসি’র বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ফাইট করবে। কথা কিন্তু আমরা বলব না। কথা বলতে হবে রাজনীতিবিদদের।

সিইসি বলেন, কার্যকরভাবে নির্বাচন হলে ইসির দায়িত্ব কমে যায়। তবে ইসির রেফারির ভূমিকা থাকে। কনটেস্ট হবে রাজনৈতিক দলের মধ্যে। ওরাই ওদের অবস্থানটাকে সুদৃঢ় রাখবে। কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে ভোট কেন্দ্রের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি ভারসাম্য সৃষ্টি হয়ে যায়। তখন আমাদের দায়িত্ব কমে আসে। আমরা দেখতে চাই, নির্বাচনের দিনে ভোটাররা এসেছেন, তারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন এবং ভোটকেন্দ্রে ঢুকছেন।
সিইসি বলেন, নির্বাচনে কারা অংশ নিয়েছে কি নেয়নি, এটি ইসির মাথাব্যথা নয়। ব্যাপক সংখ্যক ভোটার এসে যদি ভোটদান করে, তাহলে আমরা সেটাকে অংশগ্রহণমূলক বলতে পারি। তবে আমাদের দায়িত্ব নয় কাউকে নির্বাচনে নিয়ে আসা। তবুও আমরা  নৈতিকতার অবস্থান থেকে অনেকবার দাওয়াত দিয়েছি। আসুন, আমাদের সঙ্গে চা খান। ডিইও লেটার পর্যন্ত লিখেছি। এর বেশি আমরা করতে পারছি না।

সিইসি বলেন, আমাদের যদি এক শতাংশ ভোট পড়ে এবং ৯৯ শতাংশ নাও পড়ে, তবু আইনগতভাবে নির্বাচন সঠিক হবে। তবে লেজিটেমেটিসি’র ব্যাপারটা ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু আইনত নির্বাচন সঠিক হবে। আমরা লেজিটেমেসি নিয়ে মাথা ঘামাব না। আমরা দেখব, ভোটটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে কি না।

একাধিক দিনে ভোটগ্রহণের পক্ষে মত দিয়ে সিইসি বলেন, দেশের প্রেক্ষাপটে ৪২ হাজার কেন্দ্রে একদিনে ভোট করা খুবই কঠিন। তাই সবাই যদি মনে করেন নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের চিন্তা করতে পারেন। এই চিন্তার বিষয়টি আপনাদের। এটা হলে আমরা আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। সবাই বলেন সংলাপের মাধ্যমে একটা সমঝোতার প্রয়োজনীয়তার কথা। আমরাও বলেছি, সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা করে যদি একটি অনুকূল পরিবেশ গড়ে উঠত তাহলে আমাদের জন্য কাজটা সহজ হতো।

জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে বিদেশীদের অবস্থান প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আমরা মানি বা না মানি, বিদেশের কিছু লোক এখানে এসে কথা বলেন। অথচ আমরা আমেরিকা গিয়ে কিন্তু কথা বলতে পারছি না। এটার একটা কারণ হতে পারে আমেরিকা হয়তো শক্তিতে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। এটা হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। আমি সেটা জানি না।

ওরা আমাদের সঙ্গে কথা বললে আমি খুব গর্ববোধ করি না। তবে ওরা আসছে আমাদের দেশে কথা বলতে।

সিইসি বলেন, পোলিং এজেন্টদের তালিকা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়ার পর যদি তাদের গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে বুঝব সেটি বিশেষ উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।  নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত হবে না। তাই সরকারের প্রতি আহ্বান জানাব এবং আমরা আশা করব গ্রেপ্তার করা হবে না। আমরা বারবার সরকারকে এটা জানাব, যদি তাদের গ্রেপ্তার করতে হয় ছয় মাস আগেই করেন অথবা  নির্বাচনের পরে করেন।

সিইসি বলেন, সাধারণত ভোটের দিন সকাল পর্যন্ত পোলিং এজেন্টদের নাম খুবই গোপন রাখা হয়। যাতে তারা নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারেন। এটা আমাদের মাথায় আছে। অনেক সময় দেখি ১০০ জনের জায়গায় ১৫০ জন পোলিং এজেন্টের নাম দেওয়া হয়েছে। পরে যদি আমরা দেখি ভোটের আগে ১৫০ জন গ্রেপ্তার হয়ে গেছেন তখন আমাদের একটা নেগেটিভ ইমপ্রেশন নিতে হবে কেন তারা এক মাস বা ২ মাস আগে গ্রেপ্তার হলেন না। ভোটের আগের দিন সবাই উধাও হয়ে গেল কেন?

সিইসি বলেন, আমরা সৎভাবে ভোট করতে চাচ্ছি। কোনো দলের পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করতে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করিনি। তবে আমাদের দায়িত্ব অনেক কমে যাবে যদি নির্বাচনগুলো প্রতিযোগিতামূলক হয়। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে আমি যেটা বুঝেছি- ব্যাপক ভোটার যদি এসে ভোটদান করে।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচনে আমরা কি এমন করেছি যে আমাদের ওপর আস্থা আনা যাচ্ছে না। অনেককে বলতে শুনেছি আমরা নাকি লোক দেখানো কাজ করছি। তিনি বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসমুখর ভোট করা। জনগণ যাকে ইচ্ছে ভোট দেবে এবং যে বেশি ভোট পাবে সে নির্বাচিত হবে। আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করছি। তারপরও আমাদের ওপর অনেকে আস্থা রাখতে পারছে না কেন?

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে বর্তমান নির্বাচন কমিশন সেরা। এই ইসির আওতায় ৯০০-এর বেশি নির্বাচন হয়েছে। সব নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। সরকার নির্বাচনে ইন্টারফেয়ার করেনি, বরং সহযোগিতা করেছে। বর্তমান কমিশন বিজ্ঞ। অথচ বিএনপি-জামায়াত এই কমিশনের পদত্যাগ দাবি করছে। জামায়াতকে বহু আগে থেকে নিষিদ্ধ করা দরকার ছিল।

কিন্তু জিয়াউর রহমান তাদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারা এখন নির্বাচন কমিশন ও সরকার মানে না। সরকারের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব, এবার তার প্রমাণ দিতে হবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি ও বদিউল আলম মজুমদারের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বদিউল আলম মজুমদার বিএনপির সুরে কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

আজকের বাংলা তারিখ

October ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Sep    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page