25 Feb 2025, 01:07 pm

ভারতে প্রবল বৃষ্টিপাতে এ পর্যন্ত ৬২৪ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতে গত জুন মাসে বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এ পর্যন্ত ৬২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির কারণে অনেক রাজ্যে বিপর্যয় দেখা যাচ্ছে।

চলতি বছর হিমাচল প্রদেশে বর্ষার সবচেয়ে বেশি প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এখানে ২২৩ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত ৫০ বছরের মধ্যে সোলান এবং উনার জন্য সর্বোচ্চ। অন্যদিকে, এই বর্ষা মৌসুমে এ পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশে ৯৯ জন মারা গেছে, যেখানে ২০২২ সালে ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

গুজরাট রাজ্যের পরিসংখ্যান হিমাচলের চেয়ে বেশি কারণ একই বছরে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের ফলে গুজরাটে ক্ষয়ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছিল এবং পরে ভারী বর্ষণের পরে, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, গুজরাটে মোট ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্ণাটকে ৮৭ জন এবং রাজস্থানে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া পাঞ্জাবে ১১ জন এবং হরিয়ানায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে গত বছর মৃত্যুর সংখ্যা কম ছিল। অন্যদিকে, পাঞ্জাবের লুধিয়ানা ও পাতিয়ালা, হরিয়ানার যমুনানগর ও কারনাল এখনও পানির তলায় রয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, এ বছর অসমে বৃষ্টি সংক্রান্ত ঘটনার পর ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক কম। এ ছাড়া মণিপুরে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ১৫ জুন পর্যন্ত মধ্য প্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রে ৯২ জন মারা গেছে।

অন্যদিকে, রাজধানী দিল্লিতে যমুনার পানিরস্তর বৃদ্ধির ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অবস্থা এমন যে, জাতীয় রাজধানীর রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে, অনেক এলাকায় মানুষজনের ঘরবাড়িও তলিয়ে গেছে। কয়েক হাজার মানুষ দিল্লির বেশ কিছু জায়গায় সরকার কর্তৃক স্থাপন করা অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় এবং এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর মধ্যে কয়েকটি পানিতে ডুবে যাওয়ায় সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া মানুষদের দুর্ভোগ বেড়েছে। পুরানো দিল্লির যমুনা বাজারের একটি ত্রাণ শিবিরের সমস্ত তাঁবু পানিতে ডুবে যাওয়ায় মানুষজনকে শুকনো ময়দান খুঁজতে হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার এলাকাটি সম্পূর্ণ শুষ্ক ছিল এবং নিচু এলাকায় বসবাসকারী লোকজনকে সরিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষ এখানে তাদের নিজস্ব আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছে।

সরকারী বিবৃতিতে প্রকাশ, সরকার প্রায় ২,৭০০টি কেন্দ্র/তাঁবু স্থাপন করেছে এবং প্রায় ২৭,০০০ ব্যক্তি এই আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার জন্য নিবন্ধন করেছে। জানা গেছে, ত্রাণ শিবিরে থাকা লোকেরা খাবার ও পানির সমস্যায় পড়েছেন। কাউকে কাউকে খাবারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যক্তি বলেন, কোনও খাবার বা পানি নেই, আমরা শুধু এখানে বসে আছি, আমরা গতকাল সকালে শেষ খেয়েছিলাম, আমাদের কাছে যা ছিল তা দিয়ে নিজেদের খাবার তৈরি করেছি। নয়াদিল্লি এবং অন্যান্য উত্তরের রাজ্যে অস্বাভাবিকভাবে ভারী  বৃষ্টিপাতের পর বৃহস্পতিবার যমুনার পানিরস্তর শীর্ষে ছিল।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, যমুনার পানিরস্তর ধীরে ধীরে কমছে এবং ভারী বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি শিগগিরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে, যদিও তিনি আরও বলেছেন, বন্যার বিপদ এখনও শেষ হয়নি।

দিল্লির বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপি ও আম আদমি পাটির পরস্পরকে দোষারোপ

এদিকে, দিল্লিতে বন্যা পরিস্থিতির জন্য ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি এবং বিজেপি একে অপরকে দোষারোপ করছে। আম আদমি পার্টি দিল্লির জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছে এবং এ জন্য হরিয়ানা ও কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে দায়ী করেছে। ওই অভিযোগে বিজেপি তীব্র কটাক্ষ করে বলেছে, আম আদমি পার্টি মনে করে সবাই ষড়যন্ত্রে জড়িত, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, যিনি  তার শীশ মহলে আরামে বসে আছেন এবং সঠিক কাজ করছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *