July 14, 2025, 4:53 am
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে নিহত ওবাইদুলের লাশ আড়াই মাস পর ফেরত দিল বিএসএফ মাগুরার শালিখার হরিশপুর গ্রামে ঘরের ভিতর থেকে গৃহ বধুর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার বাংলাদেশে একদিনে ৩৯১ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত ; ১ জনের মৃত্যু মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর : আইন উপদেষ্টা দাখিল নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সময় বাড়লো ১১ আগস্ট পর্যন্ত মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাই আইনের আওতায় : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য বন্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে : আইজিপি পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী হত্যা ; আদালতে ছাত্রদল নেতা রবিনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালকে সহায়তার শর্তে সাবেক আইজিপি মামুনকে ক্ষমা ঢাকাস্থ খুলনা বিভাগীয় সাংবাদিক ফোরামের  উদ্যোগে ফল উৎসব
এইমাত্রপাওয়াঃ
আমাদের সাইটে নতুন ভার্ষনের কাজ চলছে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

মরার উপর খাড়ার ঘা ; বিদ্যুতের দাম বাড়ছে খুব শীঘ্রই

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মাত্র একমাস আগে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) একটি ঘোষণা স্বস্তি দিয়েছিল জনমনে। বিদ্যুতের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) কর্তৃক বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদন করা হলেও বর্তমান ঊর্ধ্বমুখী বাজারমূল্যসহ সার্বিক বিবেচনায় দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায় বিইআরসি। কিন্তু বিপিডিবির জন্য আপিলের সুযোগ রাখা হয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রিভিউ আবেদন করে বিপিডিবি।
জানা গেছে, রিভিউ পর্যালোচনায় সন্তুষ্ট হয়েছে বিইআরসি। আর তাই তাদের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবনাকে আমলে নিয়ে শিগগিরই বাড়ানো হতে পারে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম। তবে এবার শুধু পাইকারি নয় বিদ্যুতের ৬ বিতরণ কোম্পানিকেও খুচরা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব জমা দেওয়ার জন্য বলেছে বিইআরসি। যার পুরো প্রস্তাবনা ইতোমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
বিপিডিবি বলছে, বর্তমান বৈশ্বিক সংকটে সরকার স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে চাহিদামতো গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় উচ্চ মূল্যে কেনা তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হচ্ছে। এতে করে খরচ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে উৎপাদনের যে গড় খরচ ছিল ২ টাকা ১৩ পয়সা তা ২০২০-২১ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় ৩ টাকা ১৬ পয়সায়। আর চলতি বছর তা এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ২৪ পয়সা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির এক কর্মকর্ত বলেন, সরকার যে ব্যয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, বিক্রি করে তার চেয়ে কম দামে। গত অর্থবছরে (২০২১-২২) প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রি করে গড়ে পাওয়া গেছে ৫ টাকা ৯ পয়সার মতো, যেখানে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯ টাকা। বাকি টাকা ভর্তুকি হিসেবে দেয় অর্থ বিভাগ। এ অবস্থায়ও বিতরণ কোম্পানিগুলোকে যদি চলতি দামেই বিদ্যুৎ দেওয়া হয় তাহলে বছর শেষে বিপিডিবির লোকসান দাঁড়াবে প্রায় সোয়া ৩০ হাজার কোটি টাকা। এমন অবস্থায় দাম বাড়ানোর বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে বিইআরসি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল বলেন, চলতি বছরের শুরুতেই অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে বিদ্যুতের পাইকারি দাম পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব আসে পিডিবির কাছ থেকে। এ পরিপ্রেক্ষিতে মে মাসে আমরা শুনানিও করি। কিন্তু বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং তাদের দামের প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি পর্যালোচনা করে দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।

তবে আমরা যে তিনটি কারণ দেখিয়ে তা বাতিল করেছিলাম সেগুলোর বিষয়ে ব্যাখ্যাসহ পুনরায় গত ১৩ নভেম্বর তারা রিভিউ আবেদন করে। আমরা মূলত দাম না বাড়ানোর জন্য ৩টি বিষয়ে উল্লেখ করেছিলাম। এগুলো হচ্ছে বাল্ক পরিবর্তন হলে বিতরণ পর্যায়ের ওপর প্রভাব বিষয়ে প্রাক্কলন ছিল না। কিছু তথ্যের অস্পষ্টতা ছিল। এছাড়া পিডিবি দাবি করে তারা বিদ্যুতের একমাত্র ক্রেতা। কিন্তু আমরা দেখেছি আরইবিও কিছু কোম্পানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনে থাকে। রিভিউ আবেদনে এসব বিষয়ে তারা ব্যাখ্যা দিয়েছে। তাই তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কমিশনের পরবর্তী বৈঠকে ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, যেহেতু এটি রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত, তাই আবার গণশুনানির প্রয়োজন নেই। তবে আমরা এবার বিতরণ কোম্পানিগুলোকেও চিঠি দিয়েছি যদি দামের বিষয়ে তাদের কোনো প্রস্তাবনা থাকে তাহলে তা যেন আমাদের কাছে জানায়। তারা হয়তো জানাবে। সেক্ষেত্রে গণশুনানি করা হবে।
এ বক্তব্যে স্পষ্ট যে, পাইকারি পর্যায়ে তো বিদ্যুতের দামের রিভিউ হবেই আর যদি পাইকারি দাম বাড়ে এবং এ পরিপ্রেক্ষিতে বিতরণ কোম্পানিগুলোকেও বাড়তি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হবে। এক্ষেত্রে এবার শুধু পাইকারি নয় বরং গ্রাহক পর্যায়েও বাড়বে বিদ্যুতের দাম।
এ বিষয়ে কিছুটা আভাস দিয়েছেন বিতরণ সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ানও। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যেহেতু পিডিবি আবারও দাম বাড়ানোর প্রস্তাবনার বিষয়টি নিয়ে আপিল করেছে। আমাদের কাছে খুচরা দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমরা আবেদন তৈরির কাজ করছি। আশা করছি, চলতি সপ্তাহেই বিইআরসিতে আবেদন জমা দেওয়া হবে। শুধু আমরা নই অন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোও তাদের প্রস্তাবনা তৈরি করছে। তবে দাম বাড়বে কিনা সেই সিদ্ধান্ত তো বিইআরসিই দেবে। আমরা চাই সাশ্রয়ী দরে উন্নত সেবা দিতে।
একই কথা জানায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডও। বোর্ডের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই আমরা প্রস্তাবনা তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছি। আজকালের মধ্যেই বিইআরসিতে প্রস্তাবনা জমা দেব। যদি পাইকারি দাম বাড়ে তাহলে আমাদের বাড়ানো হোক। আর যদি পাইকারিতে না বাড়ে তাহলে আমাদেরও বাড়ানোর দরকার নেই।
তবে বেশ কয়েক দফায় বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলেছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, যেহেতু খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই আপাতত দাম বাড়ানোর কথা চিন্তা করছে না সরকার। পরবর্তী সময়ে যদি এ ধরনের কোনো প্রভাব পড়ে, তখন দেখা যাবে।
মাস কেটে গেলেও যুদ্ধাবস্থার উন্নতি তথা বিশ্বের জ্বালানি বাজারের অস্থিরতা না কমা, এলএনজির বিকল্প সংস্থান না হওয়াসহ নানাবিধ কারণে এখন দাম না বাড়িয়ে অন্য কোনো উপায় সরকারের হাতে নেই বলে মনে করছেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল কাঁচামাল গ্যাস, তেল, কয়লা।

সবাই জানে, বিশ্ববাজারে এসব জ্বালানির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে এবং সেই আলোকে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ ইতোমধ্যে গ্যাসের মূল্য বাড়িয়েছে। কাঁচামালের মূল্য বাড়লে ফিনিশড প্রোডাক্টের মূল্য তো বাড়বেই। গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় কমপক্ষে সেই অনুপাতে বিদ্যুতের দাম বাড়বে।

এ ছাড়া বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হচ্ছে। বিশ্ববাজারে কয়লার দামও বেড়েছে। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় গত ২ বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। উৎপাদন ব্যয়কে সমন্বয় করতে হলে এর বিক্রয়মূল্য সমন্বয় করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিকল্প নেই।
সাধারণত সরবরাহকৃত বিদ্যুতের পরিমাণকে বিবেচনায় নিয়ে বিতরণ কোম্পানির রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়। সরবরাহকৃত বিদ্যুতের দামের সঙ্গে বিতরণ কোম্পানির পরিচালন ব্যয় যোগ-বিয়োগ করে খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দেয়ায় বিতরণ কোম্পানিগুলোর রাজস্ব কমে গেছে।

পাইকারি দাম বৃদ্ধি পেলে সেই সুযোগে কম উৎপাদনকে সামনে এনে বেশি করে দাম বৃদ্ধি চাইবে এটাই স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সহসভাপতি জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম। জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে একটা সংকট চলছে তা ঠিক আছে। ব্যয়বহুল বলে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে, একই কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ।

সম্প্রতি গ্যাসের দাম বেড়েছে। এরপর জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে। সেই ধাক্কা এখনও সামাল দিতে পারছে না জনগণ। এসব দাম বৃদ্ধির কারণে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। পাইকারি দাম বৃদ্ধি হলে সরাসরি ভোক্তাদের ওপর প্রভাব পড়বে না। তবে পাইকারি দাম বাড়লেই খুচরা দাম বৃদ্ধি আবশ্যক হয়ে পড়বে। তাতে বাজার পরিস্থিতি নাজুক পড়ে পড়বে।
সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের পাইকারি দর ইউনিট প্রতি ৫.১৭ টাকা নির্ধারণ করে। বিপিডিবি ইউনিট প্রতি বর্তমান দর ৫.১৭ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৫৮ টাকা করার আবেদন করেছিল। সেই প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি নেওয়া হয় গত মে মাসের ১৮ তারিখে।

আর ১৩ অক্টোবর বিপিডিবি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে দেয় বিইআরসি। তখন বলা হয়েছিল কমিশনের আদেশে কোন পক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে এক মাসের মধ্যে রিভিউয়ের সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই রিভিউয়ের আবেদন করে বিপিডিবি।

আজকের বাংলা তারিখ

July ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Jun    
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page