অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিল্প-সংস্কৃতি একটি জাতির আত্মপরিচয় বহন করে, চেতনাকে সমৃদ্ধ করে। ১৯৪৮-১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতীয়তাবাদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। যার নেতৃত্বে ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর এ আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন শিল্পীরা।
‘লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ২০২৩’ উপলক্ষে রোববার (১৫ জানুয়ারি) দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন মাসব্যাপী ‘লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ২০২৩’ আয়োজন করছে জেনে আমি আনন্দিত। আমি এ মেলা ও লোকজ উৎসব আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৫ সালে ‘বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ‘বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন’ লোক ও কারুশিল্পের গবেষণা, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও পুনরুজ্জীবনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
আওয়ামী লীগ সরকার বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এবং দেশীয় সংস্কৃতির লালন ও বিকাশে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ১৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সোনারগাঁও জাদুঘরকে বিশ্বমানের জাদুঘরে রূপান্তরিত করার কাজ এগিয়ে চলেছে। ফাউন্ডেশনের পুষ্প উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণদানের আদলে নির্মিত সুউচ্চ ভাস্কর্য বাঙালি জাতিসত্তার পরিচয়ের প্রতীক। এখানে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও শহীদ শেখ রাসেলের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে এবং ঐতিহাসিক বড় সরদার বাড়ি পুনঃসংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। যা দর্শকনন্দিত এবং বাঙালি সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ধারক।
ফাউন্ডেশনের মাসব্যাপী ‘লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব’ দেশীয় সংস্কৃতির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমি আশা করি, এ মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী, লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলাধুলা, পুতুলনাচ, গ্রামের অবহেলিত ও প্রথিতযশা শিল্পীদের সমন্বয়ে লোকসংগীতের আসর, জারি-সারি, ভাটিয়ালি-ভাওয়াইয়া, মুর্শিদি, মারফতি, কবিগান ও পালাগান আয়োজনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবে, যা জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে। আমি ‘লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ২০২৩’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
Leave a Reply