বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : দুবাই থেকে আসা দুই যাত্রীর কাছ থেকে চুড়ি, চেইন ও হোয়াইট গোল্ডের চেইন সদৃশ ৭৩৩ গ্রাম স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়েছে।
যাত্রীরা হলেন- ঢাকার মিরপুরের নাট্যাভিনেত্রী অনামিকা জুথী ও চট্টগ্রামের রাউজানের মোহাম্মদ রায়হান ইকবাল।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর পরিচালকের নির্দেশনায় এনএসআই চট্টগ্রাম বিমানবন্দর টিম ও শুল্ক গোয়েন্দা যৌথভাবে BG148 ফ্লাইটের বিমানের ভেতরে ঢুকে ২ যাত্রীকে তল্লাশি করে।
অনামিকা জুথী দুই হাতে চুড়িগুলো স্কচ টেপ দিয়ে আটকে এবং চেইনগুলো তাদের গলায় সুকৌশলে লুকিয়ে বহন করছিলেন। এছাড়া স্বর্ণালংকারগুলো তারা তাদের হাতব্যাগে বহন করছিলেন।
তারা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের BG-148 ফ্লাইটের দুবাই-চট্টগ্রাম-ঢাকা যোগে দুবাই থেকে সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তবে তারা মূলত ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী হওয়ায় অ্যাভিয়েশন রুল অনুযায়ী তাদের একই বিমানযোগে ঢাকা পাঠিয়ে এনএসআই ও শুল্ক গোয়েন্দারা ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টিমের কাছে হস্তান্তর করেন।
জনস্বার্থে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে কার্যকর করতে জিইসি র্যাম্প নির্মাণ বন্ধ করতে হবে
বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীতে জনস্বার্থে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে কার্যকর করতে জিইসি র্যাম্প নির্মাণ বন্ধ করার দাবী জানিয়েছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের নেতৃবৃন্দ। শনিবার ( ৭ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের আলহাজ্ব সুলতান আহমদ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের নেতৃবৃন্দ এ দাবী জানান।
প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দর খানের সভাপতিত্বে এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহ- সভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া। তিনি বলেন বিগত সরকারের আমলে চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি মেগাপ্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, যার মধ্যে অন্যতম লালখান বাজার-পতেঙ্গা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। শুরু থেকেই বিতর্কিত এই প্রকল্পটি বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনদের মতামত এবং জনস্বার্থ উপেক্ষা করে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থে বাস্তবায়ন করা হয়। পরিবর্তিত সময়ে এই এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প স্থাপন নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি। সবশেষে বিতর্কিত বেশ কয়েকটি র্যাম্প প্রকল্প থেকে সাময়িক বাদ দেওয়া হলেও বাওয়া স্কুল ও জিইসি আংশানের মাঝে হোটেল পেনিনসুলার সামনে থেকে প্রস্তাবিত র্যাম্পটি বাদ দেওয়া হয়নি। অপরিকল্পিত ও ব্যক্তিস্বার্থে গৃহিত এই র্যাম্পের বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিকগণ প্রতিবাদ করার পরও এর নির্মাণকাজ বন্ধ করা হয়নি। বরং দ্রুত গড়িতে নির্মাণ করা হচ্ছে। কেন তা বন্ধ করা হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন বাওয়া স্কুল ও জিইসি জাংশানের মাঝে যে র্যাম্প নির্মাণের কাজ চলছে জনস্বার্থে তা বন্ধ করা অপরিহার্য। কারণ, এই জায়গা এমনিতেই অত্যন্ত যানজট প্রবণ এলাকা। প্রতিদিন এখানে সকাল থেকেই রাত ৮-১০টা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। এখানে নুতন র্যাম্প করলে মুল সড়কের প্রশস্থতা কমে গিয়ে জিইসি আংশে যানজট বেড়ে যাবে। পাশাপাশি এম এম আলি সড়ক জাংশান, ওয়াসা এবং লালখান বাজার মোড়ে যানজটের তীব্রতা বেড়ে যাবে। কারণ এ সকল জাংশানে নুতন করে ডান দিকের ঘুরা (Right Turning) বেড়ে যাবে এবং র্যাম্পে উঠতে আবার ডানদিকে ও বাস দিকে ঘুরতে হবে যা যানজট ও দুর্ঘটনা বাড়াবে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে কার্যকর করতে যে র্যাম্প টাইগারপাসে নামানো হয়েছে সেটাকে উঠার ও নামার র্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। এর ফলে যে সকল গাড়ী লালখান বাজার, হোটেল রেডিসন ব্লু থেকে আসবে তাদেরকে রাইট টার্ন নিতে হবে না।
অথবা যে র্যাম্প টাইপারপাসে নামানো হয়েছে সেটাকে শুধুমাত্র উঠার র্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা এবং যে র্যাম্প আমবাগানের দিকে নামানো হয়েছে তা দিয়ে লালখান বাজারমুখী গাড়িও নামতে পারবে। শুধু প্রয়োজন হবে একটা সুপরিকল্পিত জাংশান ডিজাইন।
বক্তারা আরও বলেন বর্তমানে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন জায়গায় র্যাম্প নামাচ্ছে ও উঠাচ্ছে। যে সকল জায়গায় র্যাম্প নামাচ্ছে বা উঠাচ্ছে সেখানে নিচের মূল সড়কের প্রশস্থতা কমে যাওয়ায় ভবিষ্যতে অগ্রাধিকার (প্রাইওরিটি) ভিত্তিক গণপরিবহন (বাস) সিস্টেম বা র্যাপিড বাস ট্রানজিট চালু করা কঠিন হয়ে যাবে। আর বন্দরের কন্টেইনার চলাচলেও প্রচণ্ড বাধা সৃষ্টি করবে, যা পণ্য পরিবহন গতিশীলতায় স্থবিরতা সৃষ্টি করতে পারে। নিচের মূল সড়কে সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কার্যকর হবে না।
যে এক্সপ্রেসওয়েতে গণপরিবহন (বাস) চলাচল করতে পারবে না সে এক্সপ্রেসওয়েতে নগর যাতায়াতের শতকরা সর্বাধিক ৫% লোক কিছুটা সময়ের উপকার পাবে। উন্নয়নের নামে এই সামান্য গোষ্টি স্বার্থের সুবিধার জন্য অপরিকল্পিতভাবে র্যাম্প নামিয়ে নগরের ৯৫% সাগরিকের চলাচলকে আরো সংঘাতময় করা গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানালেন পরিকল্পিত ফোরামের নেতৃবৃন্দ। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী এবিএমএ বাসেত, স্থপতি আহমেদ জিন্নুর চৌধুরী, প্রফেসর ড. নাজিম উদ্দিন, প্রফেসর ড. শফিক হায়দার চৌধুরী, প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম ও পরিবেশবিদ তসলিমা মুনা প্রমুখ।
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য–উপউপাচার্যের পদত্যাগ
বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন চট্টগ্রামের বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য প্রফেসর কাজী শামীম সুলতানা এবং কোষাধ্যক্ষ তৌফিক সাঈদও পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে তাদের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইফতেখার মনির।
তিনি বলেন, উপাচার্য অনুপম সেন বার্ধক্যজনিত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। এছাড়া ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেছেন।
এর আগে গত দুইদিন উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে বুধবার থেকে তিনটি ক্যাম্পাসে তালা দিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা৷
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ অন্যান্যদের জোরপূর্বক পদত্যাগের ঘটনা ঘটলেও ব্যতিক্রম ছিল চট্টগ্রামের বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়। সে সময় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ভিসির পদত্যাগের দাবি করলে বড় একটি অংশ ড. অনুপম সেনের পক্ষে ছিলেন।
Leave a Reply