অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : শীতকালে গ্রামাঞ্চলে খেজুর রসের বাড়তি চাহিদা থাকে। আর এর চাহিদা মিটাতে শীতের শুরুতেই খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কুষ্টিয়ার গাছিরা। এ খাত থেকে এ বছর ৪০ লাখ আয় করবেন বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।
গ্রামীণ মেটো পথ বা সবুজে ঘেরা মাঠে সারিবদ্ধভাবে একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকা খেজুরগাছগুলো এখন গাছিদের দখলে। বিকেল হলেই তারা মাটির কলস নিয়ে গাছের মাথায় উঠেন রস আহরণে। আর ভোরের কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঠার আগেই তা নামিয়ে জ্বাল দিয়ে তৈরী করেন সুস্বাদু খেজুরগুড়। আবার অনেকে গাছিদের কাছ থেকে টাটকা রস সংগ্রহ করে তা পান করে থাকেন। রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা ও নাটোর জেলার লালপুর উপজেলা থেকে গাছিরা এসেছেন কুষ্টিয়ায় খেজুর রস ও গুড় সংগ্রহ করতে। শীত মৌসুমের ৪ মাসের আয় দিয়ে বছরের অন্যান্য সময়ের আর্থিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন তারা। প্রতি কেজি গুড় ২৫০ টাকা দরে বিক্রয় করে খরচ বাদ দিয়ে এবছরও লাভের আশা করছেন গাছি আকমল হোসেনসহ অন্য গাছিরাও।
কুষ্টিয়া শহরতলীর বাইপাস সড়কের পাশের মেঠোপল্লীর ৫ শতাধিক খেজুর গাছ দখলে নিয়েছেন গাছিরা। আর এ মেঠোপল্লীর ভেজালমুক্ত খেজুরের রস বা গুড়ের চাহিদা বেশী থাকায় সকাল ও সন্ধ্যায় ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা তা সংগ্রহ করতে ছুটে আসেন এখানে। ১০টাকা করে প্রতি গ্লাস টাটকা রস খেতে ও ভেজালমুক্ত গুড় সংগ্রহ করতে পেরে খুশি তারাও। একইভাবে জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের দফাদারপাড়া গ্রাম যা অনেকে খেজুর পল্লী হিসেবে জানেন। আর এ খেজুরপল্লীর ভেজালমুক্ত খেজুরের রস বা গুড়ের চাহিদা বেশী থাকায় সকাল ও সন্ধ্যায় বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা তা সংগ্রহ করতে ছুটে আসেন এ পল্লীতে। ভেজালমুক্ত গুড় ক্রয় করতে পেরে খুশি ক্রেতরা। খুশি সুস্বাদু টাটকা রস সংগ্রহ করতে পেরেও।
কুষ্টিয়া জেলায় ১২২ হেক্টর জমিতে প্রায় ২০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। যা থেকে চলতি মৌসুমে ২০০ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ৪০ লাখ টাকা। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশ ও বিদেশে সরবরাহ হয়ে থাকে। গুড় যাতে সঠিক মানের হয় এবং বাজার ব্যবস্থাসহ সবধরণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে গাছিদের বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক সুফী মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান। খেজুর রস ও গুড় শীতের খাদ্যের একটি সুস্বাদু উপাদান। তাই বেশী করে খেজুর গাছ রোপণ ও সঠিক পরিচর্যায় অর্থনৈতিকভাবে এ খাতটি হতে পারে দেশের অন্যতম আর্থিকখাতের সহায়ক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a Reply