অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কাটসিনা রাজ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিমান সন্ত্রাসীদের তাড়া করার সময় ভুল করে আক্রমণ চালিয়ে কমপক্ষে ছয়জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। বাসিন্দাদের উদ্ধৃতি দিয়ে রোববার নাইজেরিয়ার কানো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
তিনজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, শনিবার সাফানা জেলার জাক্কা গ্রামের উপকণ্ঠে কয়েকটি কুঁড়েঘরে এই বোমাটি ফেলা হয়।
তারা আরও জানান, গ্রামে পুলিশের একটি ঘাঁটিতে ডাকাতরা হামলা চালিয়ে দুই পুলিশ সদস্য এবং তাদের সহায়তাকারী একজন পাহারাদারকে হত্যা করার পর এই হামলা চালানো হয়।
জাক্কার বাসিন্দা মুন্তারি সাদা এএফপিকে জানান, ডাকাতরা সরে যাওয়ার পর জেটটি মোতায়েন করা হয় এবং গ্রামের বাইরে একটি পরিবারের কুঁড়েঘরে আঘাত হানার আগে এটি গ্রাম প্রদক্ষিণ করে।
তাদের জানাজায় অংশ নেওয়া সাদা বলেন, পরিবারের ছয় সদস্য নিহত হয়েছে এবং তাদের দেহের বিভিন্ন অংশ ব্যাগে করে দাফনের জন্য সংগ্রহ করতে হয়েছে।
তার বক্তব্যের সমর্থনে আরও দুই বাসিন্দা একই সংখ্যা জানিয়েছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রোববার এক বিবৃতিতে “নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং তাৎক্ষণিক তদন্ত” করার আহ্বান জানিয়ে মৃতের সংখ্যা ১০ জন বলে জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে এএফপি বক্তব্য জানতে চাইলে সেনাবাহিনী কোন সাড়া দেয়নি।
নাইজেরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী বহু বছর ধরে অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। স্থানীয়ভাবে তাদেরকে ডাকাতদল বলা হয়।
এই গোষ্ঠীগুলো উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য নাইজেরিয়ার জনপদগুলোকে আতঙ্কিত করে সেখানকার গ্রামগুলোতে হামলা চালায়। তারা মুক্তিপণের জন্য বাসিন্দাদের হত্যা বা অপহরণ করে এবং লুটপাটের পর বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়।
এই সর্বশেষ আক্রমণটি দেশের উত্তরে এই ধরনের ধারাবাহিক অভিযানের সর্বশেষ ঘটনা।
জানুয়ারিতে, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি সামরিক বিমান আক্রমণে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছে। জামফারা রাজ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিমান আক্রমণের পর জুরমি জেলায় স্থানীয় গোয়েন্দাদের সক্রিয় অপরাধী দল ভেবে আক্রমণ চালানো হয়।
গত ডিসেম্বরে, পার্শ্ববর্তী সোকোটো রাজ্যে লাকুরাওয়া জিহাদিদের অবস্থানের উপর আক্রমণ চালানোর সময় দুটি গ্রামে একটি সামরিক বিমান আক্রমণে ১০ জন নিহত এবং আরও ছয়জন আহত হয়।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, নাইজেরিয়ার একটি সামরিক বিমান হামলায় উত্তর-পশ্চিম কাদুনা রাজ্যের টুডুন বিরি সম্প্রদায়ের একটি মুসলিম ধর্মীয় সমাবেশকে ডাকাত ভেবে আক্রমণ চালানো হয়।
সেই আক্রমণে কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হয়, যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে, ক্যামেরুন সীমান্তের কাছে র্যান শহরে জিহাদি সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত ৪০,০০০ মানুষের আবাসস্থলে একটি যুদ্ধবিমান আক্রমণ চালালে কমপক্ষে ১১২ জন নিহত হয়।
Leave a Reply