মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও
অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : তাইওয়ান ইস্যুতে মার্কিন সরকারের অনানুষ্ঠানিক অবস্থান পরিবর্তনের ফলে চীন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সতর্ক করে বলেছেন, বেইজিংয়ের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে ওয়াশিংটনকে অবশ্যই এক-চীন নীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে এবং তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করা চলবে না।
তাইওয়ান সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফ্যাক্টশিটে “আমরা তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি না” এই বাক্যাংশটি অন্তর্ভুক্ত নেই, যা এর আগে উল্লেখ করা হতো।
এই ফ্যাক্টশিটে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে তাইওয়ানের অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত বাক্যেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন ফ্যাক্টশিটে বলা হয়েছে, চীনের সাথে তাইওয়ানের বিরোধ “জবরদস্তি ছাড়াই এবং প্রণালীর উভয় পাশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে” সমাধান করা উচিত।
আমেরিকার আগের অবস্থান কী ছিল? : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী নীতিতে এমন সময় এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাইওয়ানকে রক্ষা করার বিষয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেননি বরং তিনি তাইওয়ানের বিরুদ্ধে মার্কিন সেমিকন্ডাক্টর শিল্প চুরি করার অভিযোগও করেছেন। যদিও জো বাইডেন সরাসরি তাইওয়ানকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
যদিও বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তাইওয়ানের স্বাধীনতার একজন কট্টর সমর্থক। এর আগে তিনি এই দশকের শেষ নাগাদ তাইওয়ানে চীনা আক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ফ্যাক্টশিট সম্পর্কে মার্কিন কর্মকর্তার বক্তব্য : আমেরিকার অবস্থান পরিবর্তনের বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেন, “প্রচলিত নিয়ম অনুসারে তাইওয়ানের সাথে আমাদের অনানুষ্ঠানিক সম্পর্কের বিষয়টি জনগণকে অবহিত করার জন্য আমাদের ফ্যাক্টশিট আপডেট করা হয়েছে।”
এই মুখপাত্র আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার “এক চীন নীতি”-তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। “এক চীন” নীতি অনুসারে বেইজিংয়ের সাথে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখে- এমন কোনো দেশই তাইওয়ানের সাথে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখার অধিকার রাখে না।
আমেরিকার অনানুষ্ঠানিক সুর পরিবর্তনের পর তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, তাইওয়ান প্রণালী চীনের অংশ নয়।
চীনের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া : মার্কিন সুর পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান ঘোষণা করেছেন, তাইওয়ানের বিষয়ে অবস্থান পরিবর্তন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক-চীন নীতি থেকে মারাত্মকভাবে পিছু হটেছে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও তাইওয়ান প্রণালীর স্থিতিশীলতার আরও ক্ষতি করতে না চাইলে তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
চীনের সামরিক প্রতিক্রিয়া : তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা তাইওয়ানের চারপাশে চীনের নৌবাহিনীর নয়টি জাহাজ এবং ৪১টি সামরিক বিমান উড়তে দেখেছে।
এই সপ্তাহে আমেরিকার নৌবাহিনীর দু’টি যুদ্ধজাহাজ সংবেদনশীল তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করার পর সেখানে উত্তেজনা বেড়েছে।
বিশ্বের মাত্র কয়েকটি দেশ তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশই তাইওয়ানের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
Leave a Reply