ফারুক আহমেদ, মাগুরা: বর্তমানে মাগুরা জেলা বিএনপি আহবায়ক আলী আহমেদ। মাগুরা-১ আসনে নির্বাচন করবেন বলে এখন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আলী আহমেদ, বাংলাদেশের একজন বর্ষিয়ান রাজনৈতিক নেতা, মাগুরা জেলার সদর উপজেলার রাঘবদাইড় ইউনিয়নের পাকা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার দীর্ঘকালীন চেয়ারম্যান পদে থাকার কারণে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনি এক অনন্য প্রভাব সৃষ্টি করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন।
আলী আহমেদ তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং মাগুরা জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক, দু’বার সাধারণ সম্পাদক, একবার সদস্য সচিব, পূর্বে একবার আহ্বায়ক এবং বর্তমানেও আহবায়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতিতে তার নাম বিএনপি-এর সমার্থক হয়ে উঠেছে। তিনি একজন ত্যাগী নেতা এবং রাজপথের লড়াকু সৈনিক হিসেবে পরিচিত। গত ১৭ বছরে আওয়ামীলীগ সরকারের অত্যাচারের শিকার হয়ে তিনি মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন, তাঁর বাড়ীতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তবুও তিনি ভেঙ্গে পড়েননি, যা তার দৃঢ় মনোভাব ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার একটি নিদর্শন। মাগুরার আলোচিত সিক্স মার্ডারের প্রধান আসামি হওয়া সত্ত্বেও, তিনি তাঁর রাজনৈতিক নৈতিকতা ও দায়িত্ব পালন অব্যাহত রেখেছেন। আলী আহমেদ বিএনপির জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন এবং এতে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তাঁর অতীতের সাক্ষাৎও উল্লেখযোগ্য, যা তাঁর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে গভীর সম্পর্কের পরিচায়ক।
বর্তমানে, মাগুরা জেলা বিএনপি আহবায়ক আলী আহমেদ তৃণমূলের মধ্যে পরিচ্ছন্ন কমিটি গঠনে সক্রিয় রয়েছেন এবং জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তিনি ধানের শীষের কান্ডারী হতে চান এবং গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছেন; এমন কি কথিত সূত্র ধরে বলা হয়েছে, তিনি তারেক জিয়ার কাছ থেকে গ্রীন সিগন্যাল পেয়েছেন। জনবান্ধব এবং কর্মীবান্ধব এই বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ যুগে যুগে মাগুরায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু তিনি এককভাবে বিএনপি’র হাল ধরে রেখেছেন এবং আগামী ত্রয়োদশ (১৩ তম) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আলী আহমেদ শুধুমাত্র একজন নেতা নন, বরং মাগুরার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
সমাজসেবা ও উন্নয়নে তাঁর পরিকল্পনা : সমাজসেবক হিসেবে আত্মনিবেদন: আলী আহমেদ অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ান ও তাঁদের সাহায্য করেন। বিশেষ করে চিকিৎসা সেবার দিকে নজর দিয়ে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সচেষ্ট আছেন। দলীয় কর্মীদের প্রতি সমর্থন: তিনি দলের নেতা ও কর্মীদের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে তাঁদের উন্নয়নে সহায়তা করেন।
২০০৮ সাল থেকে শুরু করে টানা প্রায় ১৬ বছর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের শাসনামলে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি এক কঠিন সময় পথ অতিক্রম করেছে। এই দীর্ঘ সময়ে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়লেও আলী আহমেদ তাঁর সাহসী নেতৃত্ব, সংগঠন দক্ষতা এবং জনগণের পাশে থাকার মনোভাব দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
সংগঠন রক্ষায় অবদান, এই সময়ে তিনি মাগুরায় বিএনপির তৃণমূল সংগঠনকে সক্রিয় ও ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন। নানা মামলা-হামলা ও দমননীতির মধ্যেও তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের মনোবল দৃঢ় রাখেন এবং আন্দোলন-সংগ্রামে উৎসাহিত করেন।
আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়তা, সরকারবিরোধী কর্মসূচি যেমন মানববন্ধন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ—এরকম প্রতিটা কর্মসূচিতে তিনি সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে মাগুরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিএনপির কর্মীরা রাজপথে সক্রিয় থেকেছে।
ঢাকা ও খুলনা বড় বড় সমাবেশেও তিনি সামনের কাতারে উপস্থিত থেকেছেন এবং মাগুরার নেতা-কর্মীদেরকে এসব সমাবেশে উপস্থিত হতে উৎসাহিত ও সহযোগীতা করেছেন।
এমনকি এই বয়সেও জুলাই আন্দোলনের উত্তাল সময়ে নিজে সামনের সারিতে উপস্থিত থেকে সরব নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এরকম ভিডিও স্যোশাল মিডিয়াতেও অহরহ ঘুরে বেড়াচ্ছে।
দমন-পীড়নের কারণে যখন বিএনপির রাজনীতি সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে, তখন আলী আহমেদ সমাজসেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখেন। বিশেষ করে করোনা মহামারি বা স্থানীয় দুর্যোগে তিনি ত্রাণ বিতরণ ও মানবিক সহায়তায় এগিয়ে আসেন, যা সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে সহায়তা করে। এমনকি এখনও তার দরবারে অসহায় দরিদ্র বা অসুস্থ রোগী আসলে বেশির ভাগ কেউ খালি হাতে ফিরে যান না কখনো।
দলের প্রতি আনুগত্য, কঠিন সময়ে অনেক নেতা-কর্মী রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেলেও আলী আহমেদ বিএনপির প্রতি অনুগত থেকেছেন। দলের নেতৃত্ব ও চেতনার প্রতি অবিচল থেকে তিনি দলের জন্য আত্মনিবেদন করেছেন, যা তাঁকে মাগুরায় বিএনপির একজন বিশ্বস্ত ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা হিসেবে পরিচিত করেছে। তার সমালোকরা পর্যন্ত এই ১৭ বছরে দলের দুঃসময়ে তার অবদান স্বীকার করতে বাধ্য।