“হে বিশ্বাসীগণ! দানের কথা প্রচার করে এবং কষ্ট দিয়ে তোমরা দানকে নষ্ট করো না, ঐ লোকের মতো যে নিজের ধন লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করে এবং আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাস করে না” (সূরা-বাক্বারাহ ঃ আয়াত-২৬৪)
১. হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি রসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি, মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, আমি শিরককারীদের আরোপিত শিরক থেকে মুক্ত। যে ব্যক্তি এমন কাজ করল যার মধ্যে আমার সাথে অন্য কাউকে শরীক করল, আমি তাকে এবং শিরককে পরিত্যাগ করি। (মুসলিম শরীফ)
২. হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি রসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন প্রথম যে লোকের বিচার হবে সে একজন শহীদ। তাকে উপস্থিত করা হবে। পার্থিব জগতে তাকে যে নিয়ামত দেয়া হয়েছিল সেগলো তাকে দেখানো হবে এবং সে তা চিনতে পারবে। তাকে বলা হবে, এসব নিয়ামতকে তুমি কিভাবে কাজে লাগিয়েছ ? সে বলবে, হে মহান আল্লাহ্! আমি তোমার রাস্তায় জিহাদ করেছ্ িএবং শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছি। মহান আল্লাহ্ বলবেন, তুমি মিথ্যা বললে এবং তুমি এজন্য যুদ্ধ করেছ যে, লোকে তোমাকে বীর উপাধি দিবে। অবশ্য তা বলাও হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেয়া হবে। তাকে উপুড় করে টেনে হেঁচড়ে দোযখে নিক্ষেপ করা হবে। অপর এক লোক জ্ঞান অর্জন করেছিল এবং তা অন্যকে শিক্ষা দিয়েছিল আর সে কোরআনও পাঠ করেছিল। তাকে ডেকে নিয়ে যে সব নিয়ামত দেয়া হয়েছিল তা দেখানো হবে। সে তা চিনতে পারবে। মহান আল্লাহ্ পাক বলবেন, এসব নিয়ামত তুমি কিভাবে কাজে লাগিয়েছ ? সে জবাব দেবে, আমি জ্ঞানার্জন করেছি এবং তা অন্যকে শিক্ষা দিয়েছি। আর তোমার সন্তুষ্টির জন্য কোরআন পাঠ করেছি। মহান আল্লাহ্ বলবেন, তুমি মিথ্যা বললে, বরং তুমি এজন্যই জ্ঞানার্জন করেছ যে, লোকে তোমাকে জ্ঞানী বলবে। আর কোরআন এজন্যই পাঠ করেছ যে, তোমাকে ক্বারী বলা হবে, আর তা বলা হয়েছে। অতঃপর তার সম্পর্কে আদেশ দেয়া হবে। তাকে উপুড় করে টেনে হেঁচড়ে দোযখে নিক্ষেপ করা হবে। আর এক লোককে মহান আল্লাহ্ ধন-সম্পদের যথেষ্ট প্রাচুর্য দান করেছিলেন। তাকে দেয়া নিয়ামতসমূহ তার সম্মুখে উপস্থিত করা হবে এবং সে তা শনাক্ত করতে পারবে। তাকে প্রশ্ন করা হবে, এই ধন-সম্পদ তুমি কিভাবে ব্যবহার করেছ ? সে বলবে হে মহান আল্লাহ্! যে সব পথে খরচ করাকে তুমি পছন্দ কর আমি তার প্রতিটি পথেই অর্থ-সম্পদ ব্যয় করেছি। মহান আল্লাহ্ বলবেন, তুমি মিথ্যা বললে বরং তুমি এজন্য অর্থ-সম্পদ ব্যয় করেছ যে লোকে তোমাকে দানশীল বলবে। আর তা বলাও হয়েছে। তার সম্পর্কে নির্দেশ দেয়া হবে, তাকে উপুড় করে টেনে হেঁচড়ে দোযখে নিক্ষেপ করতে। ( মুসলিম শরীফ)
৩. হযরত আব্দুল্লাহ ইব্নে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদল লোক তাকে বলল, আমরা কোন কোন সময় আমাদের বাদশাহের নিকট যাই। সেখানে যে কথাবার্তা বলি, বাইরে এসে তার উল্টো বলি। হযরত আব্দুল্লাহ ইব্নে উমার (রাঃ) বললেন, আমরা রসুলুল্লাহ (সঃ) এর সময়ে এরকম আচরণকে মুনাফিকীর মধ্যে গণ্য করতাম। (বোখারী শরীফ)
৪. হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, যে এমন জ্ঞান লাভ করল, যার দ্বারা মহান ও পরাক্রমশালী মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায় কিন্তু সে তা পার্থিব সুখ-শান্তি ও সুযোগ-সুবিধা লাভের জন্য অর্জন করর, সে কিয়ামতের দিন বেহেশ্তের ঘ্রাণও পাবে না। (আবু দাউদ শরীফ)
Leave a Reply