“তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যই থাকতে হবে। যারা কল্যাণ ও মঙ্গলের দিকে ডাকবে ন্যায় ও সৎকাজের নির্দেশ দিবে এবং অন্যায় ও পাপ কাজ হতে বিরত রাখবে। যারা এ কাজ করবে তারাই কৃতকার্য হবে।” (সূরা ঃ আলে ইমরান ঃ আয়াত ঃ ১০৪)
“বনী ঈসরাইলদের মধ্যে থেকে যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে তাদের প্রতি দাউদ ও ঈসা ইবনে মরিয়মের মুখ দিয়ে অভিশাপ করা হয়েছে। কেননা তারা বিদ্রোহী হয়ে গিয়েছিল এবং অত্যন্ত বাড়াবাড়ি শুরু করেছিল। তারা পরস্পরকে পাপ কাজ হতে বিরত রাখা পরিহার করেছিল। অত্যন্ত জঘন্য কর্মনীতিই তারা অবলম্বন করেছিল।” (সূরা ঃ মায়িদাহ ঃ আয়াত ঃ ৭৮-৭৯)
“স্পষ্টভাবে বলে দিন। এ মহাসত্য তোমাদের মহান প্রতিপালকের কাছ থেকে এসেছে। এখন যার ইচ্ছা মেনে নেবে। আর যার ইচ্ছা অমান্য করবে।” (সূরা ঃ কাহফ ঃ আয়াত ঃ ২৯)
“কাজেই হে নবী যে জিনিসের হুকুম আপনাকে দেয়া হচ্ছে তা উচ্চকণ্ঠে বলে দিন।” (সূরা ঃ হিজর ঃ আয়াত ঃ ৯৪)
“আমরা এমন লোকজনের মুক্তি দিলাম যারা খারাপ কাজ হতে বিরত
থাকত। আর যারা যালেম ছিল তাদেরকে তাদেরই বিপর্যয়মূলক কাজের জন্য কঠিন আযাব দিয়ে পাকড়াও করলাম।” (সূরা ঃ আ’রাফ ঃ আয়াত ঃ ১৯৫)
১. হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালামকে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে কেহ যখন কোন জঘন্য খারাপ কাজ হতে দেখে যে যেন তা হাত দিয়ে অথবা শক্তি প্রয়োগ করে বন্ধ করে দেয়। যদি সে এ ক্ষমতা না রাখে তবে যেন মুখের দ্বারা তা বন্ধ করে দেয়। যদি সে এ ক্ষমতাটুকুও না রাখে তবে যেন সে অন্তরের দ্বারা ঘৃণা করে। আর এটা হল ঈমানের দুর্বলতা এবং নিম èস্তর। (মুসলিম শরীফ)
২. হযরত ইবনে মাসউদ রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুলাহ সালালাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেছেন, আমার পূর্বে কোন জাতির কাছে যে নবীকেই পাঠানো হয়েছে, তার সহযোছিতার জন্য তার উম্মাতের মধ্যে এক দল সাহায্যকারীও থাকত, তারা তার সুন্নাতকে আকড়ে ধরত এবং তার নির্দেশ অনুসরণ করত এদের পরে এমন কিছু লোকের উদ্ভব হল তারা যা বলত তা নিজেরা করত না এবং এমন কাজ করত যা করার নির্দেশ তাদেরকে দেয়া হয়নি। অতএব এ ধরণের লোকজনের বিরুদ্ধে যে লোক হাত দিয়ে অথবা তার শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে জিহাদ করবে সে মু’মিন। যে মুখ দিয়ে এদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে সেও মু’মিন। আর যে অন্তর দিয়ে এদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে সেও মু’মিন। এরপর আর সরিষার দানা পরিমাণও ঈমানের স্তর নেই। (মুসলিম শরীফ)
৩. হযরত আবিল ওয়ালীদ উবাদা ইবনে সামিত রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমরা রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম এর কাছে মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করার, সুখে-দুখে, বিপদে-আপদে, স্বাভাবিক-অস্বাভাবিক সর্মাবস্থার আনুগত্য করার এবং নিজেদের উপর অন্যদেরকে অগ্রাধিকার প্রদানের শপথ গ্রহণ করেছি। আমরা আরো শপথ গ্রহণ করছি, যোগ্য ও উপযুক্ত শাসকের সঙ্গে ক্ষমতার দ্ব›েদ্ব লিপ্ত হব না। রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেন, হ্যাঁ, যদি তোমরা তাকে স্পষ্টভাবে ইসলাম বিরোধী কাজে লিপ্ত দেখ, যে সম্পর্কে তোমাদের কাছে মহান আলাহর দেয়া কোন দলীল প্রমাণ রয়েছে এবং আমরা আরো শপথ গ্রহণ করেছি, আমরা যেখানেই থাকিনা কেন, সর্বাবস্থায় হকের কথা বলব। মহান আলাহর বিধান মত জীবন যাপানের ব্যাপারে কোন নিন্দুকের নিন্দা তিরস্কারের পরওয়া করব না। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৪. হযরত উম্মে সালমা রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেছেন, তোমাদের উপর কিছু শাসক নিযুক্ত করা হবে। তোমরা তাদের কিছু কার্যকলাপের সঙ্গে পরিচিত থাকবে আর কিছু কার্যকলাপ তোমাদের কাছে অপরিচিত মনে হবে। এরূপ অবস্থায় যে লোক এগুলোকে খারাপ জানবে যে দায়মুক্ত। আর যে লোক এর প্রতিবাদ করবে সে নিরাপদ। কিন্তু যে লোক এরূপ কজোজ প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করল এবং এর সঙ্গে সহযোগিতা করল। সাহাবা কেরাম রাদিয়ালাহু আনহু জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম। আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করব না? তিনি বললেন না, যত সময় তারা নামায কায়েম করে। (মুসলিম শরীফ)
৫. হযরত হুযায়ফা রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম ইরশাদ করেছেন, সেই সত্ত¡ার কসম, যার হাতে আমার জীবন। তোমরা অবশ্যই সত্য-ন্যায়ের আদেশ এবং অন্যায় ও অসত্যের প্রতিরোধ করবে। অন্যথায়, অচিরেই মহান আলাহ তোমাদের ডাকে সাড়া দেয়া হবে না। (তিরমিযী শরীফ)
৬. হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রসুলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম ইরশাদ করেছেন, যালিম ও স্বৈরাচারী শাসকের সামনে ন্যায় ও ইনসাফ পূর্ণ কথা বলাই উত্তম জিহাদ। (আবু দাউদ ও তিরমিযী শরীফ)
Leave a Reply