“হে ঈমানদারগণ! তামোদের ওপর রোযা ফরয করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর করা হয়েছিল। …… এই রমযান মাসেই কুরআন নাযিল করা হয়েছিল, যা সমগ্র মানবজাতির জন্য হিদায়েত এবং তা এমন সু¯পষ্ট উপদেশাবলিতে পরিপূর্ণ, কাজেই আজ হতেই যে ব্যাক্তি এ মাস পাবে, তার জন্য এই পূর্ণ মাসের রোযা রাখা একান্ত কর্তব্য আর যদি কেউ অসুস্থ হয় কিংবা সফরে থাকে তাহলে সে যেন অন্য দিনগুলোয় এই রোযার সংখ্যা পূর্ণ করে নেয়।” (সূরা ঃ বাকারা ঃ আয়াত ঃ ১৮৩-১৮৫)
১. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মহান পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ বলেছেন, বনী আদমের প্রত্যেকটি আমল তার নিজের জন্য, রোযা হচ্ছে (গুনাহ থেকে) ঢাল স্বরূপ। কাজেই তোমাদের কেউ যখন রোযা রাখে যে যেন বাজে কথা না বলে, চেঁচামেচি না করে, তাকে যদি কেউ গালি দেয় বা তার সাথে ঝগড়া করে তাহলে তার বলা উচিত, আমি রোযাদার। যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ তাঁর কসম! রোযাদারের মুখের গন্ধ মহান আলাহর কাছে মিশকের চেয়েও সুগন্ধ যুক্ত। রোযাদারের দু’টি আনন্দ, যা সে লাভ করবে। একটি হচ্ছে, সে ইফতারের সময় খুশি হয়। আর দ্বিতীয় আনন্দটি সে লাভ করবে যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাত করবে, তখন সে তার রোযার কারণে আনন্দিত হবে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
২. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে আরো বর্ণিত। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর পথে একটি জোড়া (কোন জিনিস) দান করবে তাকে জান্নাতের দরজা হতে এ বলে ডাকা হবে, হে মহান আল্লাহর বান্দা! এই যে দরজাটি তোমার জন্য ভালো, কাজেই নামাযীদের নামাযের দরজা থেকে ডাকা হবে। মুজাহিদদেরকে ডাকা হবে জিহাদের দরজা হতে। রোজাদারদেরকে ডাকা হবে রাইয়ান দরজা থেকে। সাদকা দাতাদেরকে সাদকার দরজা হতে। হযরত আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ইয়া সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার বাপ-মা আপনার ওপর কুরবান হোক, যে ব্যক্তিকে ঐসবগুলো দরজা হতে ডাকা হবে এবং যদিও এর কোন প্রয়োজন নেই তবুও কাউকে কি ঐ সবগুলো দরজা হতে ডাকা হবে? উত্তর দিলেন, হ্যাঁ! আর আমি আশা করি তুমি তাদের অন্তর্ভূক্ত হবে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৩. হযরত সাহ্ল ইব্নে সা’দ রাদিয়াল্লহু আনহু হতে বর্ণিত। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, বেহেশতের একটা দরজা আছে। তাকে বলা হয় ‘রাইয়ান’। কিয়ামতের দিন এই দরজা দিয়ে একমাত্র রোযাদাররা প্রবেশ করবেন। তাঁরা ছাড়া আর কেউ এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। বলা হবে, রোযাদাররা কোথায়? তখন রোযাদাররা দাঁড়িয়ে যাবেন। সে দরজা তাঁরা ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করবে না। যখন তারা সবাই ভিতরে প্রবেশ করবেন তখন দরজাটি বন্ধ করে দেয়া হবে এবং তারপর এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করবে না। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৪. হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর পথে একটা রোযা রাখে, তার এক একটা দিনের বদৌলতে মহান আল্লাহ তাকে (দোযখের) আগুন থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৫. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাস সহকারে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমযানের রোযা রাখবে তাঁর পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৬. হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন রমযান মাস আসে, বেহেশ্তের দরজা খুলে দেয়া হয়, দোযখের দরজা বন্ধ বরে দেয়া হয় এবং শয়তানদেরকে আবদ্ধ করে দেয়া হয়। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
Leave a Reply