অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইউক্রেনের সঙ্গে প্রায় নয় মাস ধরে চলা যুদ্ধে রাশিয়ার এক লাখের বেশি সৈন্য হতাহত হয়েছে। ইউক্রেনের হতাহত সৈন্যের সংখ্যাও প্রায় সমান। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ সামরিক জেনারেল এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর সিএনএনের।
নিউইয়র্কে একটি ইকোনমিক ক্লাবে বক্তৃতাকালে জেনারেল মার্ক মিলে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান একটি অভূতপূর্ব কৌশলগত ভুল, যার জন্য দেশটিকে বছরের পর বছর ধরে মূল্য দিতে হবে। দীর্ঘদিন হুমকি-ধমকির পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। ইউক্রেনও সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ কিয়েভের পশ্চিমা মিত্ররা। মিলে বলেছেন, এই যুদ্ধ ভয়ংকর মানবিক দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। এতে ইউক্রেনের দেড় থেকে তিন কোটি মানুষ শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে।
মারা গেছে প্রায় ৪০ হাজার। তিনি বলেন, যুদ্ধে এক লাখের বেশি রুশ সৈন্য নিহত ও আহত হয়েছে। সম্ভবত একই অবস্থা ইউক্রেনীয় পক্ষেও। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্থানীয় এ সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, আসন্ন শীতে যুদ্ধের সম্মুখভাগ কিছুটা স্থিতিশীল হলে সংঘাতের অবসানের জন্য আলোচনার সুযোগ তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, যখন আলোচনার সুযোগ থাকে, যখন শান্তি অর্জন করা যায়, তখন তা গ্রহণ করুন।
এদিকে ইউক্রেনে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া রুশ কমান্ডার জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিন বুধবার গুরুত্বপূর্ণ খেরসন শহর থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি টিভিতে দেওয়া ভাষণে জানান, পর্যাপ্ত রসদ ও জনবলের অভাবে তাদের খেরসন শহর ছাড়তে হচ্ছে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইল পোডোলিয়াক রুশ কমান্ডারের এ ঘোষণায় সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ানদের কথায় ও কাজে মিল নেই।
ফলে রুশ কমান্ডার সুরোভিকিন খেরসন ছাড়ার কথা বললেও এখনই তারা এটি বিশ্বাস করবেন না। রুশ সেনারা সত্যিই খেরসন ছাড়ছে কিনা সেটি আগে দেখবেন। এ ছাড়া এখনই খেরসন শহরে ইউক্রেন তাদের সেনাদের পাঠাবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এদিকে রাশিয়ার অধিকৃত খেরসনে সড়ক দুর্ঘটনায় কিরিল স্ত্রেমাসভ (৪৫) নামের এক শীর্ষ রুশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। বুধবার খেরসনে নিয়োগকৃত রুশ আঞ্চলিক প্রধানের বরাতে সংবাদ সংস্থা তাস এ তথ্য নিশ্চিত করে। যদিও, এটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকা- তা এখনো পরিষ্কার করেনি কোনো পক্ষই।
গত ক’দিন ধরে ইউক্রেনের সেনারা খেরসন পুনর্দখলে এগিয়ে আসতে থাকায় সেখান থেকে ধীরে ধীরে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেয় রুশ সেনারা। পরে ধারণা করা হচ্ছিল শহর থেকে নিজেদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেবে তারা। বুধবার স্থানীয় সময় সকালে খেরসন শহরের প্রধান সড়কের একটি সেতু উড়িয়ে দেওয়া হয়। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নিরাপদে পিছু হটতেই সেতুটি উড়িয়ে দিয়েছে রুশ বাহিনী। তা ছাড়া রাশিয়ার যেসব সামরিক ব্লগার আছেন তারাও জানিয়েছেন, খেরসন শহর থেকে রুশ সেনারা পিছু হটছেন। যদিও তারা এমন সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি।
Leave a Reply