অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘গুজরাটের কসাই’ আখ্যায়িত করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো যে মন্তব্য করেছিলেন তাতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ মন্তব্য অত্যন্ত নিম্নমানের, যা পাকিস্তানের সঙ্গে মানানসই নয়।
এবার পাল্টা বিবৃতি দিয়ে ভারতের বক্তব্যে দেশটির ‘হতাশা ফুটে উঠেছে’ বলে উল্লেখ করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ। গতকাল (শনিবার) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।
দুই দেশের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয় নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে। সেখানে গত বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, সন্ত্রাসবাদকে স্থায়ী রূপ দিচ্ছে পাকিস্তান।তিনি ২০০১ সালে ভারতের সংসদ ভবনে হামলার ঘটনা এবং সাবেক আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে আশ্রয় দেয়ার প্রসঙ্গ তুলে ইসালামাবাদের তীব্র সমালোচনা করেন।
তার এ বক্তব্যে পাকিস্তান কতটা ক্ষুব্ধ হয় তা বোঝা যায় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলওয়াল ভুট্টোর বক্তব্যে। তিনি বলেন, “ওসামা বিন লাদেন নিহত হয়েছেন। কিন্তু গুজরাটের কসাই এখনও জীবিত। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।” পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার পর থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী না হওয়া পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার ছিল না।
পরদিন শুক্রবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে বিলওয়াল ভুট্টোর বক্তব্যের জবাব দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান হচ্ছে সেই দেশ, যারা ওসামা বিন লাদেনকে শহীদ বলেছিল। এ ছাড়া তারা লাখভি, হাফিজ সাইদ, মাসুদ আজহার, সাজিদ মির ও দাউদ ইব্রাহিমের মতো সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়। পাকিস্তানের ১২৬ জন সন্ত্রাসী ও ২৭ সন্ত্রাসী সংগঠন জাতিসংঘের তালিকায় রয়েছে, যা অন্য কোনো দেশের নেই।
এর জবাবে পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ গতকাল (শনিবার) এক বিবৃতিতে বলেন, ২০০২ সালে গুজরাটের ‘গণহত্যার’ বাস্তবতা আড়াল করার চেষ্টা করেছে ভারত সরকার। এটা ছিল হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের এক লজ্জাজনক কাহিনী। আসল কথা হচ্ছে গুজরাটের গণহত্যার নীলনকশাকারীরা বিচার এড়িয়ে গেছেন এবং ভারত সরকারের মূল পদগুলোতে আছেন। মুমতাজ আরো বলেন, দিল্লি-লাহোর সমঝোতা এক্সপ্রেসে জঘন্য হামলায় ভারতের মাটিতে ৪০ জন পাকিস্তানি নিহত হয়েছিলেন। ওই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও অপরাধীদের খালাস পাওয়া আরএসএস–বিজেপির অধীনে বিচারব্যবস্থার বেহাল দশাই ফুটিয়ে তুলেছে।
Leave a Reply