অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ব্রিটেনে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলছে নারী নির্যাতন-বিরোধী আন্দোলন। আর এরই মধ্যে সম্প্রতি লন্ডনের এক পুলিশ কর্মকর্তা নারী নির্যাতন সংক্রান্ত ৪৯টি অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। এসব অপরাধের মধ্যে ২০টি ধর্ষণের ঘটনা ছাড়াও রয়েছে নির্যাতন, ভয় দেখানো ও মিথ্যা অজুহাতে গ্রেপ্তার।
৪৮ বছর বয়স্ক ওই পুলিশ কর্মকর্তা দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে এইসব অপরাধে জড়িত ছিলেন।শুধু এই পুলিশ কর্মকর্তাই নয় আরও পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা আছে এই অপরাধী পুলিশ কর্মকর্তার মতো । কিছুকাল আগে একজন ব্রিটিশ পুলিশ কর্মকর্তা এক নারীকে অপহরণ ও ধর্ষণের পর তাকে পুড়িয়ে হত্যা করলে ব্রিটেনে এ নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল।
আসলে অহরহ অপকর্ম ও অপরাধ করার কারণে ব্রিটেনে পুলিশের ওপর জনগণের আস্থা তেমন একটা নেই। সেখানকার পুলিশের অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ব্রিটিশ পুলিশ কর্তৃপক্ষ অভিযোগের তদন্ত করে তাদেরকে অপরাধী প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন। আর এ থেকে প্রমাণিত হয় যে ব্রিটিশ পুলিশের বহু সদস্য ও কর্মকর্তা ক্ষমতা ও পদের অপব্যবহার করে বহু অপরাধ এবং নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন করে থাকে । যে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড-এর এতো সুনাম করা হয় তারা কেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে শনাক্ত করতে ও ধরতে পারে নি ?!!! তাহলে কোথায় থাকল স্কট ল্যান্ড ইয়ার্ডের পেশাগত কর্ম দক্ষতা ?
অনেকে হয়তো বলতে পারেন যে এখনতো এই অপরাধী পুলিশ কর্মকর্তার অভিযোগ ও অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু তাদের কথার জবাবে বলতে হয় যে এত দীর্ঘ সময় পরেই তা প্রমাণিত হল এবং ততদিনে বহু মানুষের মহা সর্বনাশ হয়ে গেছে!! ব্রিটিশ পুলিশে এ ধরনের অপরাধী সদস্য ও কর্মকর্তাদের অস্তিত্ব আসলে সর্ষের মধ্যে ভুত থাকার মতো ঘটনা! সমগ্র ব্রিটেনে বিপুল সংখ্যক সিসিটিভি ও ভিডিও ক্যামেরা বসানো থাকা সত্ত্বেও সেখানকার বাসা বাড়ীতে বহু চুরি আর ডাকাতির ঘটনা ঘটছে এবং সেসব বন্ধ করতে পারছে না ব্রিটিশ পুলিশ । তারা বহু অপরাধী ও চোরকেও ধরতে পারছে না।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ব্রিটেনে প্রত্যেক বয়স্ক চার নারীর একজন ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। কেবল ২০২২ সালের মার্চ মাসেই ধর্ষণের ৭০ হাজার ৩৩০টি ঘটনার তথ্য এসেছে পুলিশের কাছে। ওয়েলস ও ইংল্যান্ডে প্রতি বছর ৮৫ হাজার নারী ধর্ষণসহ নানা ধরনের যৌন নির্যাতনের শিকার হন।
প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও গড়ে চার লাখ ৬৩ হাজার ৬৩৪ জন নারী ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি ৫ জন মার্কিন নারীর একজন যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়াও প্রতি বছর হাজার হাজার নিরাপরাধ নারী মার্কিন পুলিশের হামলায় হতাহত হচ্ছেন।
আসলে পশ্চিমা সভ্যতার কর্ণধাররা বিভিন্ন দেশে নারী স্বাধীনতার বিষয়ে কথা বলে আসলেও তারা নিজ নিজ দেশেই নারীদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম নন। নারী স্বাধীনতা বলতে তারা আসলে নারীদের নগ্ন হওয়ার স্বাধীনতাকেই বোঝান। নারীর অধিকারের জন্য তারা মায়াকান্না বা কুম্ভীরাশ্রু ঝরালেও বাস্তবে তারা নারী সমাজকে নানাভাবে শোষণ ও প্রতারণার শিকার করতেই কথিত নারী-প্রগতি, নারী স্বাধীনতা ও নারী অধিকারের কথা বলে থাকেন। পাশ্চাত্যে নারী সমাজ যে সবচেয়ে বেশি শোষণের শিকার তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন দেখা যায় যে সেখানে অবৈধ জন্মের হার, গর্ভপাত, তালাক এবং কথিত কুমারী মাতার সংখ্যা ও সমকামিতার মত নানা পাপ আর অনাচার সবচেয়ে বেশি।
Leave a Reply