জাফিরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানীতে সুদসহ আসল টাকা পরিশোধের জন্য সুদের মহাজনের চাপ সইতে না পেরে সিরাজুল ইসলাম সুরুজ নামে এক ব্যবসায়ি আত্নহত্যা করেছেন।
গত ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার আনুমানিক দুপুর দুইটার দিকে সে তার শ্বশুর মৃত আলি আহমদের বাড়ি দুইতলায় ফ্যানের রডের সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাস লাগিয়ে আত্নহত্যা করেন।
সিরাজুল ইসলাম সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের রামচন্দ্র পুর গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে ।
স্বজন সুত্রে জানা গেছে, সিরাজুল ইসলাম সুরুজ দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে শ্রমিকের কাজ করতেন। কয়েকবছর আগে দেশে ফিরে হলিধানী বাজারে একটি কনফেকশনারি দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। হঠাৎ করে তার দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে গিয়ে তিনি ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়লে তিনি দোকান ছেড়ে দেন। এর মাঝে অনেক পাওদানার তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। শুক্রবার কোন এক পাওনাদারের ফোন কলে সে ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে তার শ্বশুর বাড়ি গলায় রশি দিয়ে আত্নহত্যা করেন।
এদিকে মৃত সিরাজুল ইসলাম সুরুজের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা রয়েছে ‘সুধখোরদের অত্যাচারে বাঁচতে পারলাম না, আমার জায়গা-জমি বাড়ি সব বিক্রি করে দিয়েছি। একেক জনের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া তার সাত আট দশগুণ পরিমাণ টাকা দিয়েও রেহাই দিলো না তারা। কেউ কেস করেছে কেউ কেউ অপমান অপদস্ত করেছে আমি আর সহ্য করতে পারছিনা তাই বিদায় নিলাম। আমার জানাযা হবে কিনা জানিনা। যদি হয় তখন সব সুদখোররা টাকা চাইতে এলে আমার শরীরটাকে কেটে ওদেরকে দিয়ে দিবেন। এই সুদখোরদের বিচার আল্লাহ করবে। সুদখোরদের নাম বললাম না কিন্তু তারা সবাই টাকার জন্য আসবে। তখন বুঝতে পারবেন তারা কারা আমি ক্ষমার অযোগ্য তবু ক্ষমা করে দিবেন।’
মৃত সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী সবুরা খাতুন বলেন, আমার স্বামী সুদ খোরদের অত্যাচারে এবং তাদের চাপে আত্নহত্যা করেছে আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, ঘটনাটি শুনেছি। এই বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে, আমরা খতিয়ে দেখব।
Leave a Reply