অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করার আইনি আর কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আইনি বিষয়টি এখন অতীত ও পুরোপুরি বন্ধ। এখন একমাত্র পথ আছে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া। তিনি যদি দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চান, সেটা তাঁর (খালেদা জিয়া) বিষয়; আমার নয়।’
আইনমন্ত্রী সচিবালয়ে আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন । এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও আইনসচিব গোলাম সারোয়ার উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্য নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আইনমন্ত্রী। মঙ্গলবার মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, আইনমন্ত্রী একসময় বলেছিলেন দণ্ড স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকতে দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই। অথচ তার কিছুদিন পর খালেদা জিয়া বাসায় এসেছিলেন।
আজ সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর (মির্জা ফখরুল) এই বক্তব্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কোথাও এমন কথা আমি বলিনি।’ তিনি বিএনপির মহাসচিবকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য বলার আহ্বান জানান।এরপর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আইনমন্ত্রী। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তাঁর ক্ষমতা প্রয়োগ করে ফেলেছেন। পুনরায় এ ক্ষমতা প্রয়োগের আর কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্রপতির কাছে তারা ক্ষমা চাইতে যাবে কি না সে পরামর্শ আমি দিতে চাই না। তবে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা ছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই।’ সাংবাদিক জানতে চান, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার আইনি কোনো সুযোগ আছে কি না? এর উত্তরেই আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমতা চাইতে হলে খালেদা জিয়াকে দোষ স্বীকার করে আবেদন করতে হবে। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া চাইলে ক্ষমা চেয়ে সাজা মওকুফ করার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারেন।
অন্য এক সাংবাদিক জানতে চান, আ স ম আবদুর রব ও হাজি সেলিম দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পরও তাঁদের দুজনকে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে সরকার।
উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, আবদুর রবকে মুক্তি দেওয়া হয় সামরিক শাসন চলাকালে। তাঁকে ফৌজদারি কার্যবিধির ক্ষমতাবলে মুক্তি দেওয়া হয়নি। আর হাজি সেলিমের দণ্ডাদেশ বহাল থাকার পর তিনি আপিল করেন। আপিল করার পর হাইকোর্ট বিভাগ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে। তিনি ওই সময়ের আগেই দেশে চলে আসেন।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, খালেদা জিয়ার ব্যাপারে আইনে কোথাও বলা নেই বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার। তাঁকে শর্তযুক্ত মুক্তি দেওয়া হয়। তাতে বলা আছে, বিদেশে যেতে পারবেন না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়টি রাজনৈতিক নয়; এটি আইনি বিষয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। তাঁর বিদেশে যাওয়ার সময় কোনো শর্ত ছিল না। তাঁকে অনুমতি নিতে হয়নি।
Leave a Reply