অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাজবাড়ীর বিয়েবাড়ির গেটে পার্টি স্প্রে ছোড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বর ও কনেপক্ষের লোকজন। এতে বরসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। একপর্যায়ে কনে না নিয়েই পালিয়ে যায় বরপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের সাঙ্গুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ব্যসদী গ্রামের মুক্তার শেখের ছেলে শরিফুল শেখের সঙ্গে সাঙ্গুরা গ্রামের দেলোয়ার মোল্লার মেয়ে হেলেনা খাতুনের কাবিন রেজিস্ট্রি ও বিয়ে সম্পন্ন হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে বর শরিফুল শেখ প্রায় ৫০ জন বরযাত্রীসহ গাড়িবহর নিয়ে আনন্দ উল্লাসে কনে হেলেনা খাতুনের বাড়িতে যান। বাড়ির সামনে এলে গাড়ি থেকে বরকে হাসিমুখে নামিয়ে নেন কনেপক্ষ। সাজানো বিয়ের গেটে বরকে বরণ করা হয়। খাওয়ানো হয় মিষ্টি ও শরবত। হাসি-তামাশায় মেতে ওঠেন বরপক্ষ ও কনেপক্ষের লোকজন। তবে মুহূর্তেই হাসি-তামাশা রূপ নেয় বিষাদে। তামাশার ছলে কনেপক্ষের লোকজনের গায়ে পার্টি স্প্রে ছুড়ে মারেন বরপক্ষের একজন। স্প্রে শরীরে লাগায় রেগে যায় কনেপক্ষের লোকজন। উত্তেজিত হয়ে পড়েন বরপক্ষের লোকজনও। বাকবিতণ্ডা থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। একপর্যায়ে লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষই। সংখ্যায় কম হওয়ায় মার খেয়ে আহত হয়ে বরযাত্রী নিয়ে পালিয়ে যান বর। পরে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন তারা।
শরিফুল শেখের ভাই খাইরুল শেখ বলেন, আমরা কনের বাড়িতে যাওয়ার পর বিয়ের গেটের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়ে যায়। হঠাৎ আমাদের মধ্যে থেকে একজন আনন্দ উল্লাস করতে করতে পার্টি স্প্রে মারে। এতে কনেপক্ষের দাড়িওয়ালা এক মুরব্বি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা আমাদের কাঠের চলা দিয়ে মারপিট করেন। আমার বড় ভাইয়ের মাথায় আঘাত করে। তার মাথা ফুলে গেছে।
বর শরিফুল শেখ বলেন, আমার তিন ভাই লিটন, খায়রুল ও সাবরুল বেশি মার খেয়েছে। আমি ঠেকাতে গেলে কনেপক্ষের লোকজন আমাকেও মারধর করে। পরে আমি সবাইকে নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে আসি।
শরিফুলের বাবা মুক্তার শেখ বলেন, তারা একজন আরেকজনকে লাঠি এগিয়ে দিয়ে বলে সবাইকে ধরে পিটা। একজনও যেন বের হতে না পারে। পরে আমরা অবস্থা বেগতিক দেখে সবাই পালিয়ে এসে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকালে সাঙ্গুরা গ্রামে কনে হেলেনা বেগমের বাড়িতে গেলে তার বাবা দেলোয়ার মোল্লা বলেন, আমাদের যেই লোকটার দিকে পার্টি স্প্রে মারা হয়েছিল সেই লোকটা খুব অসুস্থ। যে কারণে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে। বিয়ের আয়োজন করতে আমার প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়। তবে ঝামেলার কারণে বরপক্ষ খাবার না খাওয়ায় সেই খাবার নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি বলেন, পরে রাতে আমরা দুই পক্ষই বালিয়াকান্দি থানায় গেলে ওসি সাহেব বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। এরপর থানা থেকেই বরপক্ষ আমাদের মেয়েকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান।
জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একেএম ফরিদ হোসেন বলেন, সাঙ্গুরা গ্রামে বিয়ে বাড়িতে পার্টি স্প্রে ছোড়াকে কেন্দ্র করে বর ও কনেপক্ষের সংঘর্ষের কথা আমি শুনেছি। তবে তারা কোনো পক্ষই আমার কাছে আসেননি। বিষয়টি এখন পর্যন্ত কী অবস্থায় আছে তাও আমি জানি না।
Leave a Reply