23 Nov 2024, 06:45 am

মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা ‘বাইডেন ও ব্লিংকে’‘ফিলিস্তিনি নিরপরাধ মানুষদের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছেন কী ?

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মানবতার শত্রু ইহুদিবাদী ইসরাইল আবারও অবরুদ্ধ গাজার হাসপাতালে ও স্কুলে রক্তের গঙ্গা বইয়ে দিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার ভোরে গাজার আশশিফা হাসপাতালের একটি জরুরি চিকিৎসা ইউনিট ও প্রসূতি ইউনিট ইসরাইলি গোলা বর্ষণের শিকার হলে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি হতাহত হন। ইসরাইলি ট্যাংক গাজার আরও তিনটি হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে। এ ছাড়াও বিকালে ইসরাইলি বন্দুকধারীরা গাজার আরেকটি হাসপাতালে গুলি চালিয়ে অন্তত এক ফিলিস্তিনিকে শহীদ ও বেশ কয়েকজনকে আহত করে। আহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও রয়েছে।

এ ছাড়াও ইসরাইল গাজার একটি স্কুলে গোলা বর্ষণ করলে এবং ইসরাইলেরই ঘোষিত নিরাপদ করিডোর দিয়ে পালিয়ে যেতে সচেষ্ট জনগণের ওপর হামলা চালালে অন্তত ৪০ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হন। জাতিসংঘের পরিচালিত আলবুরাক স্কুলে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ২০ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে।  ইসরাইলের স্থল-অভিযানের মুখে মানবিক বিপর্যয়ের কারণে  দক্ষিণ গাজার দিকে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার ফিলিস্তিনি সালাহউদ্দিন সড়ক ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এইসব বেসামরিক ফিলিস্তিনির ওপরও পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি হানাদার বাহিনী। ফলে শহীদ হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় ২৬০ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। ফলে গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং এই সংখ্যা সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১১ হাজার ২০৮-এ উন্নীত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে চার হাজার ৫০৬ শিশু ও তিন হাজার ২৭ জন নারী এবং ৬৭৮ জন বয়স্ক ব্যক্তি রয়েছেন। এ ছাড়াও অন্তত ২৭ হাজার ৪৯০ জন আহত হয়েছেন।  নিখোঁজদের সংখ্যা প্রায় দু হাজার ৭০০ যাদের মধ্যে দেড় হাজার শিশু। এদের বেশিরভাগই নিহত এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন। গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি সেনারা পশ্চিম তীরেও অন্তত ১৭৪ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।

ইসরাইলি সেনারা গত এক সপ্তারও বেশি সময় ধরে উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণ গাজাগামী দুই প্রধান সড়ক নিয়ন্ত্রণ করছে বলে খবর এসেছে। মানবীয় বিপর্যয়ের কারণে   জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় বিভাগের মুখপাত্র  জেনস লারিকি উত্তর গাজাকে পৃথিবীর নরক বা জাহান্নাম বলে উল্লেখ করেছেন। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এখানে কোনো ত্রাণ সাহায্য আসেনি বলে তিনি জানিয়েছেন। ভীত-সন্ত্রস্ত নারী ও শিশুরা দেখছে গোলার আগুনে লেলিহান লালচে আকাশ এবং ইসরাইলের এইসব গোলা প্রতিনিয়ত কেড়ে নিচ্ছে ফিলিস্তিনি শিশুদের প্রাণ!

বিশ্ব-স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে এরিমধ্যে গাজার ২০টি হাসপাতাল অকেজো হয়ে পড়েছে। ইসরাইলি স্থল-বাহিনী গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আশশিফাকে ঘিরে রেখেছে। নরওয়ের একজন ডাক্তার যিনি গাজায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি হাসপাতালগুলোর ওপর ইসরাইলি হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের কাছে পাঠানো এক বার্তায় লিখেছেন, আপনি কি আশশিফা হাসপাতাল থেকে ভেসে আসা আর্তনাদগুলো শুনতে পাচ্ছেন? আপনি কি নিরপরাধ মানুষদের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছেন? আপনি কি সেইসব শরণার্থীদের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছেন যারা একটু নিরাপদ স্থান খুঁজতে এখানে এসেছিল তাদের ওপর বোমা মেরেছে ইসরাইল আজ সকালে?!  এম গিলবার্ট নামের ওই চিকিৎসক এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন এক্স বা সাবেক টুইটারে। ওই ভিডিওতে দেখা যায় ইসরাইল গাজার হাসপাতালগুলোর ওপর বোমা বর্ষণ করার পর পরই ভয়ার্ত ও আতঙ্কিত ফিলিস্তিনিদের আর্তনাদের শব্দ ভেসে আসছে।

এর আগে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে ইসরাইল উত্তর গাজায় প্রতি দিন চার ঘণ্টার জন্য মানবিক যুদ্ধ-বিরতি কার্যকর করবে! কিন্তু রক্ত-পিপাসু ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে এর প্রায় এক ঘণ্টা পরই বলা হয়েছে গাজায় বোমা বর্ষণ অব্যাহত থাকবে এবং ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতি করা হবে না।

প্রশ্ন হল আরব বিশ্ব, মুসলিম বিশ্ব কি এখনও ইসরাইলের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে আসবে নাকি পাশ্চাত্য ও তাদের নিয়ন্ত্রিত জাতিসংঘের মতই শতাব্দির বৃহত্তম গণহত্যাকে নিরব দর্শকের মত প্রত্যক্ষ করবে?

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 8343
  • Total Visits: 1274645
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২০শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৬:৪৫

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018