ফারুক আহমেদ, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ১২৪ বছরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। মাগুরার বিজ্ঞ শ্রীপুর সহকারী জজ আদালতের বিচারক গত সোমবার ১ এপ্রিল এ আদেশ দেন যার মামলা নং ওসি ৭৯/২০২৪। সেইসঙ্গে কেন স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না মর্মে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সভাপতি হুমাউনুর রশিদ মুহিত সহ নিয়োগবোর্ডের ৩ জন প্রতিনিধি শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কে নোটিশ প্রাপ্তির ৩ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেন বাদী হয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়মের কথা তুলে ধরে মাগুরা বিজ্ঞ শ্রীপুর সহকারী জজ আদালতে আরজি জানালে বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে এ আদেশ দেন। মামলার আরজিতে জানা গেছে, নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অবসর গ্রহণের কারণে পদটি শূন্য হলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী প্রধান শিক্ষককে গত ৭ ফেব্রুয়ারী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। কিন্তু তাকে কোনো কাগজপত্র বা হিসাব-নিকাশ বুঝে দেওয়া হয়নি। এরমধ্যেই প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য একটি বহুল প্রচারিত জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিধান থাকলেও সেক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া বা সময় অনুসরণ করা হয়নি। বাদীপক্ষ ম্যানেজিং কমিটির সচিব হলেও তাকে কোনো প্রকার কাগজপত্র প্রদান করা হচ্ছে না। এমন কি কতজন প্রার্থী আবেদন করেছেন তাও তার অজানা। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানালেও তার কোনো সুরাহা হয়নি। তাই এ বে-আইনী নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ চেয়ে তিনি আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। আদালত শুনানী শেষে নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
আর এই মামলার কারণে গত সোমবার ১ এপ্রিল নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ হুমাউনুর রশিদ মুহিত স্মারক সংখ্যা ১২৭১/২০২৪/৪১ এ সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে তার (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক পদ হতে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ তাকে দায়িত্ব হতে অব্যহতি ও সাময়িক বরখাস্ত করেছে। আর ৩ দিনের মধ্যে বরখাস্ত করা হবে না কেন তার জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আর ঐ পদে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সুবর্না জামানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেন জানান, স্কুলে পরিচালনা পর্ষদের কোন মিটিং করা হয়নি। এই মিটিং সভাপতি তার বাড়িতে আলোচনা করে আমাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত ও অব্যহতি দিয়েছে।
এলাকাবাসীর সচেতনমহলের বেশ কিছু সমাজসেবক ও বুদ্ধিজীবি ব্যক্তিগণ বলেন, নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও পরিচালনা পর্ষদ কমিটির যোগসাজশে বিভিন্ন রকমের কাজের অনিয়ম ও দূর্নীতি সৃষ্টি হচ্ছে।
Leave a Reply