02 Oct 2024, 06:31 pm

গাজার শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিপজ্জনক চর্মরোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  ওয়াফা এলওয়ানের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে বিপজ্জনক চর্মরোগের কারণে গাজা তাঁবুর শহরে ঘুমাতে পারছেনা। সেখানে তাঁবুতে সে এবং তার সাত সন্তান আশ্রয় নিয়েছে। উদ্বিগ্ন মা বললেন, ‘আমার ছেলে সারারাত ঘুমাতে পারে না কারণ, তার শরীরের চর্মরোগের চুলকানি বন্ধ করতে পারে না।’ ছেলেটির পায়ে এবং পায়ের পাতায় টি-শার্টের নিচে সাদা এবং লাল ফুসকুড়ি এবং স্ক্যাবিস থেকে চিকেন ফক্স, উকুন, ইমপেটিগো এবং অন্যান্য ফুসকুড়িতে ত্বকের সংক্রমণে ভুগছেন এমন অনেক গাজাবাসীর মধ্যে তিনি একজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে,গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীকে এমন খারাপ পরিস্থিতিতে থাকার জন্য বাধ্য করা হয়েছে। এই ভূখন্ডের দেড় লাখেরও বেশি মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে।

এলওয়ান বলেছেন, ‘আমরা মাটিতে, বালিতে ঘুমাই যেখানে আমাদের নীচে কীট বেরিয়ে আসে’। তার পরিবার মধ্য গাজার শহর দেইর আল-বালাহে সমুদ্রের কাছে একটি বালুকাময় স্থানে বসবাসকারী হাজার হাজারের মধ্যে একজন। এলওয়ান বিশ্বাস করেন সংক্রমণ অনিবার্য। ‘আমরা আগের মতো আমাদের বাচ্চাদের গোসল করাতে পারছি না। জায়গাটি ধোয়া ও পরিষ্কার করার জন্য আমাদের জন্য কোনো স্বাস্থ্যবিধি এবং স্যানিটারি পণ্য নেই। কিছুই নেই।’ অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বলতেন ভূমধ্যসাগরে ধুতে। কিন্তু, যুদ্ধের ফলে যে দূষণ তৈরি হয়েছে তা মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলোকে ধ্বংস করে রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সমুদ্র পুরোটাই নর্দমা। তারা এমনকি আবর্জনা এবং শিশুর ন্যাপকিনও সমুদ্রে ফেলে।’
ডব্লিউএইচও গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৯৬,৪১৭ টি স্ক্যাবিস এবং উকুন, চিকেন ফক্সের ৯,২৭৪টি, ত্বকে ফুসকুড়ির ৬০,১৩০টি এবং ইমপেটিগোর ১০,০৩৮টি সংক্রমণের রিপোর্ট করেছে। দেইর আল-বালাহ ক্যাম্পে একটি অস্থায়ী ক্লিনিক পরিচালনাকারী ফার্মাসিস্ট সামি হামিদের মতে,স্ক্যাবিস এবং চিকেন ফক্স উপকূলীয় ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।
দুই ছেলে ক্লিনিকে তাদের হাতে,পায়ে, পিঠে এবং পেটে ছড়িয়ে থাকা চিকেন ফক্স-জনিত ফোস্কা এবং স্ক্যাব দেখায়। বাস্তুচ্যুত হামিদ (৪৩) নিজে ওষুধের অভাবে চুলকানি প্রশমিত করার জন্য ছেলেদের ত্বকে ক্যালামাইন লোশন মাখেন। শিশুদের ত্বক ‘গরম আবহাওয়া এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে’ ভুগছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এর গাজার মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ আবু মুগাইসিব এএফপি’কে বলেছেন,শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে বসবাস করছে। কারণ, ‘তারা শিশু,বাইরে খেলবে, যে কোনও কিছু স্পর্শ করবে, না ধুয়ে কিছু খাবে।’ আবু মুগাইসিব বলেন, গরম আবহাওয়া ঘাম বাড়ায় এবং ময়লা জমে যা ফুসকুড়ি এবং অ্যালার্জির কারণ। ঘামাচির হলে সংক্রমণ হয়। তিনি বলেছেন ‘মানুষ আর ঘরে থাকে না, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি নেই’।
এমএসএফ ডাক্তাররা লেশম্যানিয়াসিসের মতো অন্যান্য ত্বকের অবস্থার আবির্ভাবকে ভয় পান, যা সবচেয়ে মারাত্মক আকার হতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 2413
  • Total Visits: 1097470
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1639

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বুধবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৪ ইং
  • ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
  • ২৯শে রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সন্ধ্যা ৬:৩১

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018