অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরায়েলে আবারও ব্যাপক রকেট হামলা চালিয়েছে লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। জ্যেষ্ঠ এক কমান্ডারকে হত্যার ঘটনায় সৃষ্ট উত্তেজনা ও যুদ্ধের দামামার মধ্যেই মধ্যরাতে এই রকেট হামলার ঘটনা ঘটল।
রোববার (৪ আগস্ট) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ইসরায়েলের হামলায় লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর এক সিনিয়র কমান্ডার নিহত হওয়ার পর শক্তিশালী এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সঙ্গে ইসরায়েলের বড় ধরনের সংঘাতের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘কঠোর’ প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরান। গত বুধবার তেহরানে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে দেশটি। বৈরুতে ইসরায়েল হিজবুল্লাহ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে হত্যা করার কয়েক ঘণ্টা পর তেহরানে হানিয়াকে হত্যা করা হয়।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, লেবানন-ভিত্তিক ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহও এই অবস্থায় যেকোনও প্রতিশোধের জন্য বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এমন অবস্থায় হিজবুল্লাহ স্থানীয় সময় শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উত্তর ইসরায়েলের বেইট হিলেল শহরে কয়েক ডজন রকেট নিক্ষেপ করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ফুটেজে দেখা গেছে, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিজবুল্লাহর নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে বাধা দিচ্ছে। তবে এখনও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে এএফপি বলছে, উত্তর ইসরায়েলের বেইট হিলেল বসতিতে কয়েক ডজন কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে হিজবুল্লাহ ঘোষণা করেছে। তারা বলেছে, দক্ষিণ লেবাননের কাফার কেলা এবং দেইর সিরিয়ানে ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হয়েছে। ওই হামলায় বেসামরিক অনেকেই আহত হয়েছেন।
এর আগে শনিবার হিজবুল্লাহ দেইর সিরিয়ানের একজন ১৭ বছর বয়সী কিশোরসহ তাদের দুই যোদ্ধার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেছিল।
এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বৈরুতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস তার নাগরিকদের মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ‘যেকোনো টিকিট পাওয়া মাত্র’ লেবানন ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির একই ধরনের সতর্কতার পর এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, আঞ্চলিক পরিস্থিতির ‘দ্রুত অবনতি হতে পারে’।
জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তার নাগরিকদের উদ্দেশ্যে নির্দেশনা জারি করেছে। দেশটি লেবাননে অবস্থানকারীদের অবিলম্বে চলে যেতে বলেছে এবং অন্যদের সেখানে ভ্রমণ না করার জন্য সতর্ক করেছে।
অন্যদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কানাডা তার নাগরিকদের ইসরায়েল ভ্রমণে না যেতে সতর্ক করেছে। দেশটি বলছে, এই অঞ্চলে ‘পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে’।
মার্কিন দূতাবাস শনিবার বলেছে, যারা লেবাননে থাকতে চান তাদের উচিত ‘ভালো পরিকল্পনা প্রস্তুত করা’ এবং ‘বর্ধিত সময়ের জন্য কোথাও আশ্রয়’ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা।
তারা আরও বলেছে, বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইট স্থগিত এবং বাতিল করেছে। এছাড়া অনেক এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে, তবে ‘লেবানন ছেড়ে যাওয়ার বাণিজ্যিক পরিবহন বিকল্পগুলো এখনও অ্যাভাইলেবল রয়েছে’।
Leave a Reply