09 May 2024, 09:28 pm

কুমিল্লায় ১২ বছরের মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় অপহরণ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় ১২ বছর বয়সী মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় অপহরণ করে পরিবারের অমতে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা করেছেন মেয়েটির বাবা বরুড়া উপজেলার ১৪নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের নিখিল চন্দ্র দাস। মামলা করার পর গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়ি ছাড়া পরিবারটি।

এ ঘটনায় শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার বরুড়ার একটি কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলন করে বিচার চেয়েছেন নিখিল চন্দ্র দাস।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তার ১২ বছর বয়সী মেয়ে পূর্ণিমা রানী দাস ধুলিয়ামুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের প্রতিবেশী দীপালী রানী দাস ইতালি প্রবাসী। কুমিল্লা শহরে দীপালী রানী দাসের বাসায় কাজ করেন রুনু নামে এক নারী। দীপালীর বাসায় কাজ করা রুনুর ছেলে অন্তরের সঙ্গে পূর্ণিমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য নিখিলকে প্রস্তাব দেন দীপালী। মেয়ে নাবালক হওয়ায় বিয়েতে রাজি হননি নিখিল চন্দ্র দাস। এতে ক্ষিপ্ত হন দীপালী। গত ২২ এপ্রিল দীপালী তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন অন্তর নামে সেই ছেলেটিকে। পরে কৌশলে পূর্ণিমাকে তার ঘরে নিয়ে যান। পরে দুজনকে এক কক্ষে আটকে রেখে অপবাদ দেওয়া হয় তারা খারাপ কাজ করেছে। এ সময় লোকজনকে জড়ো করা হয়। তারা দীপালীর প্রভাবের ভয়ে কেউ কথা বলেননি। এ সময় পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পূর্ণিমাকে উদ্ধার না করেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

পরে পূর্ণিমার বাবাকে খবর দেওয়া হলে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এ সময় মুচলেকা রেখে মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে নিখিলকে ৫০০ টাকার স্ট্যাম্প আনতে বাজারে পাঠান দীপালী। নিখিল চন্দ্র বাজারে স্ট্যাম্প আনতে গেলে এই ফাঁকে পূর্ণিমাকে অপহরণ করে কুমিল্লা শহরে নিয়ে যায় দীপালী গংরা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাশেমকে জানানো হলে তিনি আসছি-আসবো করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে কূল-কিনারা না পেয়ে বরুড়া থানায় যান নিখিল। এ সময় মামলা করতে গেলে ওসি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী দীপালীর নামটি উল্লেখ করে এজাহার দেওয়া যাবে না বলে জানান। মামলা করতে হলে অজ্ঞাত নাম দিতে হবে বলে জানালে নিখিল থানা থেকে চলে আসেন। পরে ২৪ এপ্রিল বাদী হয়ে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন তিনি। আদালত মামলটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

কুমিল্লা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলাটি তদন্তে কাজ চলছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব ভিকটিম শিশুটিকে উদ্ধার করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনব।

মামলা না নেওয়ার বিষয়ে বরুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারটি থানায় এসেছিল। আমরা বলেছি অজ্ঞাত আসামি দেওয়ার জন্য। তারা বলেছিল বুঝেশুনে আবার আসবে। কিন্তু পরে আর আসেনি।

এদিকে ধুলিয়ামুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র লোধ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলছে। সারা বরুড়া উপজেলায় মোট তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত। যার মধ্যে আমার বিদ্যালয়টি একটি। পূর্ণিমা রানী দাস নামের একটি মেয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। আমাদের এখানে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এ বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। পরিবারের কেউ আমাকে এ বিষয়ে বলেনি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 3683
  • Total Visits: 711660
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1125

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বৃহস্পতিবার, ৯ই মে, ২০২৪ ইং
  • ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১লা জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৯:২৮

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018