অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৬ দফা দাবিতে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এতে সড়কের দুই পাশে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট, ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রী।
সকাল ১১টার দিকে মহাসড়কের পাশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা। পরে পৌনে ১২টার দিকে তারা সড়কে বসে অবরোধ শুরু করেন। এতে শত শত কর্মকর্তা অংশ নেন।
অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৪-৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। এতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন, পরিবার নিয়ে পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।
তিনি আরও বলেন, চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল, ওএসডি প্রত্যাহারসহ মোট ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের এই দুঃসহ পরিস্থিতি ও ন্যায্য দাবির কথা দেশের মানুষ ও সরকারের কাছে পৌঁছে দিতেই এ মানববন্ধন।
আন্দোলনরতরা অভিযোগ করে বলেন, হাইকোর্টের এই আদেশ অমান্য করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২২ সেপ্টেম্বর প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মকর্তার জন্য নতুন করে ‘বিশেষ দক্ষতা মূল্যায়ন’ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে এবং তাতে বাধ্যতামূলক অংশ নিতে নোটিশ দেয়া হয়। পরীক্ষা বর্জন করায় ৪শ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল, ওএসডি প্রত্যাহারসহ মোট ৬ দফা দাবি জানান।
অন্যদিকে মহাসড়ক অবরোধের কারণে চট্টগ্রামমুখী ও ঢাকামুখী যানবাহন দীর্ঘ সময় আটকে পড়ায় সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন। অনেকে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
অবরোধকারীদের ৬ দফা দাবি হলো–
১. চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে।
২. প্রহসনমূলক পরীক্ষা বয়কটের জন্য কর্মকর্তাদের যে পানিশমেন্ট ট্রান্সফার দেওয়া হচ্ছে, তা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৩. বৈষম্যহীন ও রাজনীতিমুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
৪. শর্ত আরোপ করে সব ধরনের অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট বন্ধ করতে হবে।
৫. চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের উপর চালানো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং পুনরায় কর্মস্থলে তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।
৬. পরীক্ষা বর্জনের জন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে সাধারণ ডায়েরি ও সাইবার ক্রাইমে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে, তা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ শেষে দুপুর ১টার পর কর্মসূচি শেষ করেন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলন করে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা রোববার থেকে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে শনিবার সকাল থেকেই মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের আন্দোলন শুরু হয়।