স্টাফ রিপোর্টার : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় অবস্থিত দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারের আওতাধীন গোকুলনগর কৃষি খামারের উপ-পরিচালক সঞ্জয় দেবনাথের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ১২ লক্ষ টাকা মূল্যের সরকারি গাছ কেটে বিক্রি করে আত্মসাৎ করেছেন।
এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃষি ফার্ম ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগরে অবস্থিত। ১৯৫৮ সালে দত্তবাবু নামের এক ব্যাক্তি তার ২ হাজার ৭৩৭ একর জমিতে সবজি চাষ শুরু করেন। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর পর পাকিস্তান সরকার জমিগুলো সরকারের আওতায় নিয়ে মথুরা, গোকুলনগর, পাথিলা, কুশোডাঙ্গা ও করিঞ্চা নামকরণে ৫টি ফার্মে ভাগ করে বীজ উৎপাদন শরু করে। যা বর্তমানে এখনও চালু রয়েছে।
প্রতিবছর কৃষি ক্ষেতে বাংলাদেশের যে বীজ প্রয়োজন হয় তার অনেকটাই এই দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামার থেকেই সরবরাহ হয়ে থাকে।
লাভজনক এই কৃষি খামারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যাপক দূর্ণীতির কারণে প্রতিবছর সরকার কোটি কোটি টাকা লোকসান দিয়ে থাকে।
আয়-ব্যায়ের হিসাবে শুভংকরের ফাঁকি দিয়ে তারা প্রতিবছর কোটি কোটি লুটে দিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করে থাকে। ঠিকাদারী কাজের মাধ্যমে ও বিভিন্নভাবে কামিশন খেয়ে তাদের ঐসব অবৈধ কাজে সহযোগীতা করে থাকে স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক চামচারা।
দত্তবাবু তার জমিতে সব্জি চাষের পাশাপাশি ১৯৫৮ সালেই তার খননকৃত পুকুর ও রাস্তার ধারে মেহগনীসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপন করেন। বর্তমানে যার এক একটির মূল্য লক্ষাধীক টাকা।
দত্তনগর খামারের আওতাধীন গোকুলনগর খমারের অফিস ভবনের নিকটবর্তী পুকুরের ধারে ছিল মোটা মোটা মেহগনীসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৪০/৫০টি গাছ।
সম্প্রতি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই কিছুদিন আগে যোগদানকারী উপ-পরিচালক সঞ্জয় দেবনাথ পুকুর সংস্কারের নামে মূল্যবান ঐ গাছগুলোর মধ্য থেকে প্রায় ২০টি গাছ কেটে রাতের আধারে প্রায় ১২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। চোরাইভাবে যারা গাছগুলো কিনেছেন তারা গাছের মোটা মোটা গুড়িগুলো নিয়ে গেলেও কিছু ডালপালা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
এসংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজ পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে স্থানীয় যে সকল সাংবাদিক ঐ কৃষি খামারে যাচ্ছে তাদের সকলকেই টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিচ্ছেন।
চুরি করে ঐ সকল সরকারী গাছ কেটে বিক্রি করার কাছে সহযোগীতা করছেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি। যিনি কয়েক বছরের ফার্ম থেকে লুটপাট করা টাকার কমিশন খেয়ে কোটিপতি বনে গেছেন।
এব্যাপারে মাননীয় কৃষিমন্ত্রী মহোদয়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের মহাপরিচালক, ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক, দূদক ঝিনাইদহ সমন্বিত জেলা কর্যালয়ের উপ-পরিচালক ও মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করা হচ্ছে।
Leave a Reply