অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহে ভুট্টার অধিক ফলন হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত ফলন পেয়ে হাসি ফিরেছে কৃষকের মুখে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারের ভুট্টার আবাদ ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তবে অতিরিক্ত খরার কারনে ভুট্টার মোচা কিছুটা হালকা হয়েছে। গাছেই শুকিয়ে যাচ্ছে ভুট্টা। ফলন ভালো হলেও কাঁচা ভুট্টার দাম নিয়ে কৃষকের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার সবকটি উপজেলায় ভুট্টার ব্যাপক আবাদ হয়েছে।কৃষাণ কৃষাণীরা ভুট্টা সংগ্রহের মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠেই চলছে ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ। পরিবারের বড়দের সঙ্গে ছেলেমেয়েরাও কাজ করছে হাসিমুখে।
কৃষকরা বলছেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর ভুট্টার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। প্রথমদিকে মানহীন বীজ রোপণের কারনে অনেক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েন। পরবর্তীতে ভালো ফলন পেয়ে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশা কৃষকের। তবে কাঁচা ভুট্টার নাম নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। কেউ কেউ বলছেন, কাঁচা ভুট্টার দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। দুই তিন দিন রোদে শুকানোর পরে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।
কৃষক তাহের মন্ডল বাসস কে বলেন, শুকনো ভুট্টার দাম মণ প্রতি ১১শ’ থেকে সাড়ে ১১শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ দামে ভুট্টা বিক্রি করলে খুব বেশি লাভ হবে না। যে কারনে অনেকেই ভুট্টা শুকিয়ে বাড়িতে সংরক্ষণ করছেন।
দেশে ভুট্টার বহুবিধ ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও কৃষক পর্যায়ে বেশি দাম দিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
কালুহাটি গ্রামের ব্যবসায়ী সবুজ হোসেন বাসস কে বলেন, কাঁচা ভুট্টার দাম কম। প্রতি মণ কাঁচা ভুট্টা ৮শ’ থেকে সাড়ে ৮২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম আরও একটু বেশি হলে কৃষক লাভবান হতো। তবে কৃষক যদি নিজেরা শুকিয়ে ভুট্টা বিক্রি করে, তাহলে দাম আরেকটু বেশি পেতে পারে।
কৃষক ইশারত আলী বলেন, এবছর প্রতি বিঘা ভুট্টার আবাদে প্রায় ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
প্রতি বিঘায় গড়ে প্রায় ৬০/৬৫ মণ হারে কাঁচা ভুট্টার ফলন হয়েছে। মাড়াই খরচ, জমির লিজ খরচ ও শ্রমিক খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, জেলায় এবার মোট ১৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন কৃষক।
বীজের মানভেদে ফলন সম্ভাবনা বিঘা প্রতি ৬৫ থেকে ৭০ মণ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বাসস কে বলেন, ভুট্টার আবাদ উপযোগী আবহাওয়া থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি, কৃষক ভালো দামও পাবেন। ফলনের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান। ফলনের প্রকৃত তথ্য ও উৎপাদন হার পেতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। ভুট্টাসহ খাদ্য শস্যের চাষাবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষি বিভাগ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।