অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কাগজে কলমে নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি চলছে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের লোকবল, অবকাঠামো দিয়ে ।যার ফলে এ হাসপাতলে চিকিৎসক সংকট এবং অবকাঠামগত সংকটের কারনে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা পূর্ণাঙ্গভাবে প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।
নওগাঁ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানিয়েছেন, নওগাঁ জেলার হাসপাতালটি গত ২০২২ সালে ১০০ থেকে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে দাপ্তরিক অনুমোদন লাভ করে।
কাগজে-কলমে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল হলেও এ হাসপাতালে রয়েছে বাস্তবে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সুযোগ সুবিধা।
১০০ জন রোগীর জন্য খাবার বরাদ্দ, ধোপা বরাদ্দ,লজিস্টিক সাপোর্ট এবং জনবল কাঠামো রয়েছে। ১০০ শয্যা জনবলের মধ্যে আবার ৩০ ভাগ জনবলের সংকট রয়েছে। এর ফলে চিকিৎসা সেবা প্রতিনিয়ত বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক।
নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনের পাশাপাশি আধুনিক মানের ৮ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ২৫০ শয্যার মধ্যে নতুন ভবনে ১৫০ জন এবং পুরনো ভবনে ১০০ জন রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা কথা। কিন্তু ইতিমধ্যে নওগাঁয় মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। মেডিকেল কলেজের স্থান নির্ধারণ বা ভবন নির্মাণ না হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক কার্যক্রম এবং একাডেমিক কার্যক্রম পুরোটাই হাসপাতালের পুরনো ভবনে করা হচ্ছে। যার ফলে পুরনো ভবনে কোন রোগীর আসন ব্যবস্থা নেই। কেবলমাত্র হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আর নতুন ভবনে সব রোগীর আসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে নতুন ভবনের ১৫০ আসন থাকলেও প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০জন রোগীর ভর্তি ব্যাবস্থা করা হয়ে থাকে। এতে হাসপাতালের মেঝে করিডোর সবখানে রোগীদের বিছানা পেতে শুয়ে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। অধিকাংশ রোগী হাসপাতালের বিছানা পায়না।
এদিকে চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হওয়ার একটি বড় কারণ। এ হাসপাতালে ২০ জন সিনিয়র কনসালটেন্ট থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ১৫ জন। অপরদিকে মেডিকেল অফিসার ১৮ জন থাকার কথা থাকলেও সেখানে রয়েছে মাত্র ৯জন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেছেন, এ হাসপাতালে অন্ততঃপক্ষে আরও ৫ জন কনসালটেন্ট এবং ৯ জন মেডিকেল অফিসার পদায়ন করলে রোগীদের কোন রকমে চিকিৎসা ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
ক্যাটাগরি অনুসারে এ হাসপাতালে ১০০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং মিডওয়াইফ নার্স ৩০ জন থাকার কথা। সেখানে সব মিলিয়ে রয়েছে মাত্র ৮১ জন নার্স।
এদিকে এ হাসপাতালে প্রতিদিন আউটডোরে ৮০০ থেকে ১৬০০ রোগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১- ২০২২ আর্থিক বছরে রাজস্ব আয় হয়েছিল মাত্র ৪৫ লক্ষ টাকা। সেখানে ২০২৩-২০২৪ আর্থিক বছরে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। চিকিৎসক, নার্স সংকট দূর করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রয়োজনীয় অবকাঠামগত উন্নয়ন ঘটলে একদিকে যেমন চিকিৎসা সেবা আরো সম্প্রসারিত হবে এবং অপরদিকে রাজস্ব আয় আরো অনেকগুণ বেড়ে যাবে বলে তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন।
Leave a Reply