অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে বক্তৃতা দেওয়ার সময় বাধার মুখে পড়লেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার বক্তব্যের মাঝপথে বাধা দেন এক নারী এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানান। নিজেকে ‘রাব্বি’ বা ইহুদি ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব বলে উল্লেখ করেন।
বাইডেনের বক্তব্যের মাঝপথে বাধা দিয়ে ওই নারী বলেন, ‘মাননীয় প্রেসিডেন্ট, আপনি ইহুদিদের প্রতি যত্নশীল। একজন রাব্বি (ইহুদি ধর্মীয় নেতা) হিসেবে আমি আহ্বান জানাচ্ছি, এখনই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করুন।’
পরে সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে রাব্বি জেসিকা রোজেনবার্গ হিসেবে নিজের পরিচয় দেন ওই নারী।
তবে সরাসরি ‘যুদ্ধবিরতি’ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেননি বাইডেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা দর্শকেরা ওই নারীকে সরানোর চেষ্টা করার সময়ই জবাব দেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের একটা বিরতি দরকার। এ বিরতির মানে হলো বন্দীদের মুক্ত করার জন্য সময় দেওয়া।’
হোয়াইট হাউজ পরবর্তীতে স্পষ্ট করে জানায় যে হামাসের হাতে থাকা ২৪০ জিম্মির কথা উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্ট।
বাইডেনের অনুষ্ঠান থেকে নিরাপত্তাকর্মীরা রোজেনবার্গকে সরিয়ে নেয়ার সময়ও ‘এখনই যুদ্ধবিরতি চাই’ বলে গান গাইছিলেন ওই নারী।
তখনও বাইডেন বক্তৃতায় বলতে থাকেন, ইসরায়েল ও মুসলিম বিশ্ব—দুই পক্ষের জন্যই পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত জটিল’ হয়ে পড়েছে।
“আমি দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধান সমর্থন করি, অনেক আগে থেকেই। ঘটনা হচ্ছে হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। স্পষ্টতই একটি সন্ত্রাসী সংগঠন,” ইসরায়েলকে সমর্থন করে বলেন তিনি।
৭ অক্টোবর হামাসের ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা গাজার সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে সবাইকে হতবাক করে দেয়। ইসরায়েল জানিয়েছে, এই হামলায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে যাদের অধিকাংশ বেসামরিক আর হামাসের যোদ্ধারা ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রেখেছে।
এরপর থেকে হামাসকে নির্মূল করার প্রত্যয় নিয়ে গাজায় স্থল, জলপথ ও আকাশপথে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৬৪৮ শিশুসহ অন্তত ৮৭৯৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের প্রথম কয়েক ঘণ্টায়ও গাজা নগরীর আল-কুদস হাসপাতালের আশপাশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে। এই হাসপাতালকে সতর্ক করে এখান থেকে অবিলম্বে সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে গেলে রোগীদের জীবন বিপন্ন হবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।
Leave a Reply