November 13, 2025, 12:27 am
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে দুইদিন ব্যাপি কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন আগামী বছর হজ করতে পারবেন সাড়ে ৭৮ হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্মি সার্ভিস কোরকে প্রস্তুত থাকতে সেনাপ্রধানের আহ্বান আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দিল দ. কোরিয়া গত অক্টোবরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মতবিনিময় সভা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নাকফুল- আংটি-বদনা ফিরে পেলেন বাগেরহাটের শ্রাবণী বাগেরহাটের চিতলমারী ও মোল্লাহাটে অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার চাঁদপুরে পাঁচটি পাইপগানসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
এইমাত্রপাওয়াঃ

ভারতের চাল রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বে খাদ্য সংকটে পড়তে পারে

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের অতি প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। এর প্রভাবে বিশ্বব্যাপী দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট। বুধবার (২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

গত ২০ জুলাই নন-বাসমতি সাদা চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। মূলত অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় ভারতীয় চালের সংকট দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, মানুষ আতঙ্কিত হয়ে চাল কিনছেন। যার প্রভাবে বেড়ে গেছে এ পণ্যের দামও।

বিশ্বব্যাপী কয়েক হাজার জাতের চাল উৎপাদন হয়। তবে আমদানি-রপ্তানি হয় মূলত চার জাতের চাল। এরমধ্যে সরু লম্বা দানার ইন্ডিকা চাল সবচেয়ে বেশি বেঁচা-কেনা হয়। আর বাকিগুলো হলো সুগন্ধি বাসমতি, ছোট দানার জাপোনিকা; যেটি সুসি এবং রিসোটস তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং আঠালো চাল; যা মিস্টি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ হলো ভারত। বিশ্বের মোট চাহিদার ৪০ ভাগই আসে এ দেশ থেকে। চাল রপ্তানির শীর্ষে থাকা অন্য দেশগুলো হলো থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্র।

চাল আমদানিকারক দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে চীন, ফিলিপাইন এবং নাইজেরিয়া। অপরদিকে অভ্যন্তরীণ বাজারে ঘাটতি দেখা দিলে ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশ চাল আমদানি করে। এখন আফ্রিকা মহাদেশেও চালের চাহিদা বাড়ছে। এছাড়া কিউবা এবং পানামাতেও শক্তির মূল উৎস হলো চাল।

গত বছর ভারত ১৪০টি দেশে ২২ মিলিয়ন টন চাল রপ্তানি করেছে। যার মধ্যে ৬ মিলিয়ন টন ছিল তুলনামূলক কমদামী ইন্ডিকা চাল। (গত বছর বিশ্বব্যাপী চাল আমদানি-রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৫৬ মিলিয়ন টন)।

২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী যত চাল আমদানি-রপ্তানি হয়েছে তার ৭০ শতাংশ ছিল ইন্ডিকা চাল, আর এখন ভারত সেই চাল রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। গত বছর দেশটি খুদের চাল এবং বাসমতি চাল রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ কর আরোপ করে। এরপরই আসল পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা।

প্রত্যাশিতভাবেই জুলাইয়ে ভারতের চাল রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আইএমএফের অর্থনীতিবিদ পিয়ে-অলিভার গোরিনচাস বলেছেন এই নিষেধাজ্ঞা চালের দাম বাড়িয়ে দেবে এবং বিশ্বব্যাপী শস্যের দাম ১৫ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাজার বিশ্লেষক সিরলে মুস্তাফা বলেছেন, ভারত এমন সময় চালের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যখন ‘সময়টা ভালো নয়।’

প্রথমত ২০২২ সালের শুরু থেকেই চালের দাম বাড়ছে। গত জুন থেকে এখন পর্যন্ত যা ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে

দ্বিতীয়ত, চালের সরবরাহে এখন বিঘ্ন দেখা যাচ্ছে, বাজারে নতুন চাল আসতে আরও তিন মাস বাকি আছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় অস্বাভাবিক আবহাওয়া— ভারতে অধিক বৃষ্টি ও পাকিস্তানে বন্যা চাল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। এছাড়া সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে চালের মূল্যও বেড়েছে।

অপরদিকে যেসব দেশ চাল আমদানি করে তাদের মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় আমদানি বেড়ে গেছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে এ ব্যবসার ব্যয়ও বেড়েছে।

জাতিসংঘের বাজার বিশ্লেষক মুস্তফা বলেছেন, ‘আমরা এমন পরিস্থিতিতে আছি যেখানে আমদানিকারকরা বাধার মধ্যে পড়েছেন। এসব আমদানিকারক মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবেন কিনা এখন এটিই দেখার বিষয়।’

ভারতের নিজস্ব মজুদকৃত ৪১ মিলিয়ন টন চাল রয়েছে। যা প্রয়োজনে তুলনায় প্রায় ৩ গুণ। এসব চাল দেশটির ৭০ কোটি মানুষকে কম দামে দেওয়া হয়।

গত বছর ভারত বড় ধরনের মূল্যস্ফীতির মধ্যে দিয়ে গেছে। গত অক্টোবর থেকে দেশের বাজারে চালের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। যা নির্বাচনের আগে দেশটির সরকারের ওপর তৈরি করেছে বাড়তি চাপ।

ভারতের কৃষি নীতির বিশেষজ্ঞ দ্বেবিন্দর শর্মা বলেছেন, এল নিনোসহ অস্বাভাবিক আবহাওয়ার কারণে চালের উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আর এ কারণে সরকার আগে থেকেই এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাইছে।

অনেকের বিশ্বাস ভারতের চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত নয়। কারণ এই নিষেধাজ্ঞা বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর।

খাদ্য বিষয়ক সংস্থা ইফরি জানিয়েছে, বিশ্বের ৪২টি দেশ তাদের মোট আমদানির অর্ধেক চালই আনে ভারত থেকে। আফ্রিকার কিছু দেশ রয়েছে যেগুলো মোট আমদানির ৮০ শতাংশ যায় এশিয়ার এ দেশ থেকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে খাদ্যপণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা নতুন নয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাঁধার পর ইন্দোনেশিয়া পাম ওয়েল, আর্জেন্টিনা মাংস, তুরস্ক শস্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। কিন্তু ভারতের চাল রপ্তানির বিষয়টি অন্য। এর বড় প্রভাব পড়বে বিশ্বে। কারণ তাদের রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল অনেক দেশ।

তারা আরও বলেছেন, এই হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা খাদ্য নিশ্চয়তাকে তো শঙ্কায় ফেলবেই, সঙ্গে বিশ্বে ভারতেরও সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে। কারণ বিশ্বে তখন ‘ভারতকে আর নির্ভরযোগ্য চাল রপ্তানিকারক হিসেবে বিবেচনা করবে না।’ সূত্র: বিবিসি

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page