অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতে শিবসেনা-বিজেপিশাসিত মহারাষ্ট্রে ছাগল কোরবানির প্রস্তুতিকে কেন্দ্র করে গোলযোগের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে মুম্বাই সংলগ্ন মীরা রোডে অবস্থিত জেপি ইনফ্রা সোসাইটিতে দু’টি ছাগল কুরবানির জন্য আনা হলে কয়েক ঘণ্টা ধরে তুমুল গোলযোগ হয়। ওই ইস্যুতে বিক্ষোভকারীরা কখনো ‘হনুমান চালিসা’ পাঠ করেন আবার কখনো ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সামান্য ধস্তাধস্তি হয়। তবে পুলিশ লোকজনকে বুঝিয়ে বিষয়টি শান্ত করেছে।
জানা গেছে, মহসিন শেখ নামে এক ব্যক্তি আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য দু’টি ছাগল নিয়ে আসেন। এ সময় সোসাইটির লোকজন বিষয়টি জানতে পারে এবং সোসাইটির বাইরে উগ্রহিন্দুত্ববাদী বহিরাগত লোকজন জড়ো হয়ে ছাগলগুলোকে বাইরে বের করে দেওয়ার জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। বিক্ষোভকারীরা এ সময়ে ‘হনুমান চালিসা’ পাঠ শুরু করে এবং ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। শেষমেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লোকজনকে বুঝিয়ে বিষয়টি শান্ত করেন। এ সময় সোসাইটির লোকজন ও পুলিশের মধ্যে কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা অবশ্য বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সোসাইটিতে কোরবানি দেওয়া যায় না। আমরা এটা হতেও দেবো না। এটা করা হলে আমরা মামলা রুজু করে তাকে গ্রেফতার করব। কিন্তু মানুষ বাসায় ছাগল আনতে পারবে কী না সোসাইটিতে এমন কোনো নিয়ম নেই। তা সত্ত্বেও আমরা জনগণের অনুভূতির কথা বিবেচনা করে এখান থেকে ছাগল নিয়ে যেতে বলব।
অন্যদিকে, কুরবানির জন্য ছাগল নিয়ে আসা মহসিন শেখ বলেন, এই সোসাইটিতে দু’শো/আড়াইশ’ মুসলিম পরিবার বসবাস করে। প্রত্যেক বছর বিল্ডার ছাগল রাখার জন্য জায়গা দিতেন, কিন্তু এবার তিনি বলেন, জায়গা নেই। এ জন্য আপনার সোসাইটির সাথে কথা বলুন। মহসীন শেখ বলেন, ছাগল রাখার জন্য তাদের কাছে জায়গা চাওয়া হলেও কোনো জায়গা দেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার ভোরে মহসিন দু’টি ছাগল বাসায় নিয়ে আসেন। যদিও মহসিন বলেন, আমরা সোসাইটিতে কখনই কোরবানি করি না। সবসময় এটি কসাইখানা বা ছাগলের দোকানে সম্পন্ন করা হয়। আর এবার ছাগল আনার কথা জানাজানি হতেই বিক্ষোভ শুরু করেন সোসাইটির লোকজন।
পুলিশ জানিয়েছে, সোসাইটির আশেপাশে বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কাউকে ভিড় জমাতে দেওয়া হচ্ছে না। একই সঙ্গে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। ঈদুল আযহা উপলক্ষে পরিবেশ নষ্ট না করতেও সতর্ক করা হয়েছে।
Leave a Reply