অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশের সব নাগরিকদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে সরকার। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য দেশের নাগরিকদের পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনা। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সকল শ্রেণি পেশার নাগরিক পেনশন সুবিধা পাবেন। সর্বজনীন পেনশনে রয়েছে চারটি স্কিম। প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রবাস স্কিম। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের প্রগতি স্কিম। স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা স্কিম। স্বকর্মে নিয়োজিত স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য সমতা স্কিম।
এরই মধ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের জন্য একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। ‘ইউপেনশন’ (upension.gov.bd) নামের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের সময় মেনে চলতে হবে কয়েকটি ধাপ।
নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় প্রথমেই একটি প্রত্যয়ন পাতা আসবে; যেখানে লেখা থাকবে—‘এই মর্মে প্রত্যয়ন করছি যে আমি সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নই। সর্বজনীন পেনশন স্কিমবহির্ভূত কোনো ধরনের সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে সুবিধা গ্রহণ করি না। আমি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় কোনো ধরনের ভাতা গ্রহণ করি না।’
তবে, প্রত্যয়ন অংশে অবশ্যই সাবধানে ক্লিক করতে হবে। কারণ সেখানে স্পষ্টভাবে লেখা আছে ‘ভুল তথ্য প্রদান করলে আবেদন বাতিল হবে এবং জমাকৃত অর্থ ফেরত যোগ্য হবে না।’
এই পাতার নিচের দিকে ‘আমি সম্মত আছি’ অংশে ক্লিক করলে দ্বিতীয় পাতায় গিয়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। এখানে আবেদনকারীকে প্রবাস, সমতা, সুরক্ষা বা প্রগতি- এই চার স্কিমের মধ্য থেকে প্রযোজ্য স্কিম বাছাই করতে হবে। একই সঙ্গে ১০, ১৩ বা ১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, ই–মেইল আইডি লিখে দিতে হবে। এরপর পাতার নিচের দিকে থাকা ক্যাপচা লিখে পরের পাতায় যেতে হবে।
সঠিকভাবে ক্যাপচা দেওয়ার পরে আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর ও ই–মেইলে একটি ওটিপি আসবে। ওই ওটিপি ফরমে ব্যবহার করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।
এরপর যে পেজ আসবে সেখানে ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। আগের পেজে দেওয়া এনআইডি অনুযায়ী এই পেজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদনকারীর এনআইডি নম্বর, ছবি, বাংলা ও ইংরেজি নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা দেখাবে। এখানে আবেদনকারীর বার্ষিক আয়ের পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে এবং নিজের পেশা, বিভাগ, জেলা ও উপজেলার নাম নির্বাচন করতে হবে।
এই ধাপ শেষে ‘স্কিম তথ্য’ নামে আরেকটি পেজ আসবে। এখানে মাসিক চাঁদার পরিমাণ ও চাঁদা পরিশোধের সময় বেছে নিতে হবে। এখানে চাঁদা পরিশোধের জন্য মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক তিনটি অপশন থাকবে।
এরপর দিতে হবে ব্যাংক তথ্য। এই পেজে আবেদনকারীকে ব্যাংক হিসাবের নাম ও নম্বর, হিসাবের ধরন (সঞ্চয়ী অথবা চলতি), ব্যাংকের নাম ও শাখার নাম উল্লেখ করতে হবে।
এবার নমিনি তথ্যের পাতায় গিয়ে নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে নমিনিকে যুক্ত করতে হবে। এখানে একাধিক নমিনিও যুক্ত করা যাবে। এ সময় নমিনির মোবাইল নম্বর, নমিনির সঙ্গে সম্পর্ক, নমিনির প্রাপ্যতার হারের (একাধিক নমিনি হলে) তথ্য দিয়ে সর্বশেষ ‘সম্পূর্ণ ফরম’ ধাপে যেতে হবে।
এটিই নিবন্ধনের শেষ ধাপ। এ ধাপে আগে পূরণ করা ব্যক্তিগত তথ্য, স্কিম তথ্য, ব্যাংক তথ্য ও নমিনি তথ্য দেখানো হবে। সেখানে কোনো ভুল থাকলে আবার শুরুতে গিয়ে তথ্যের প্রয়োজনীয় সংশোধন করা যাবে। আর সব তথ্য ঠিক থাকলে তাতে সম্মতি দিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এ সময় চাইলে সম্পূর্ণ আবেদনটি ডাউনলোডও করতে পারবেন আবেদনকারী।
আজ থেকেই অনলাইন ফরম পূরণ অথবা সরাসরি সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে নিবন্ধন এবং চাঁদা দেওয়া শুরু হয়েছে। মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও চাঁদা দেওয়া যাবে। জানা গেছে, চারটি স্কিমের জন্য আলাদা চারটি হিসাব খোলা হয়েছে সোনালী ব্যাংকে। এ হিসাবগুলোতে চাঁদা জমা হবে। সোনালী ব্যাংক দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও পরে অন্য ব্যাংকও যুক্ত হবে।
Leave a Reply