অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অলিগলি ও মূল সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় ১২ লাখ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক। হাইকোর্টের তিন দফা নির্দেশনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞার পরও এগুলো বন্ধ হচ্ছে না। স্থানীয় কতিপয় নেতা এবং কিছু অসাধু পুলিশ ও চাঁদাবাজচক্রের যোগসাজশে এগুলো চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশেই চলছে এ ধরনের রিকশা। সরকারি সঠিক কোন হিসেব না থাকলেও বিভিন্ন সংস্থা তথ্যে বলা হয়, ঢাকাসহ সারা দেশে ৫৫ থেকে ৬০ লাখের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আছে।
জানা যায়, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইককে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজিসহ অবৈধ আয়ের পথ তৈরি হয়েছে। এসবের চালক ও মালিকদের কাছ থেকে আদায় করা চাঁদার টাকায় অনেকেই ফুলেফেঁপে উঠেছে। মূলত এদের সহযোগিতায় নগরীর বিভিন্ন অলিগলিতে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ গ্যারেজ। ৯০ শতাংশ গ্যারেজেই ব্যবহার হচ্ছে অবৈধ বিদ্যুৎ। অধিকাংশ গ্যারেজ মালিক একটি রিকশার ব্যাটারি চার্জ করতে ১২০ টাকা করে আদায় করছে। এখান থেকে তারা চাঁদা পরিশোধ করছে। এজন্য তাদের কোনো বিল দিতে হচ্ছে না।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের জরিপে দেখা যায়, এসব রিকশার ব্যাটারি চার্জে দিনে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যয় হচ্ছে। যার অধিকাংশই মূল লাইন থেকে অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে। ফলে এর অর্থ সরকার পাচ্ছে না। বর্তমান সংকটের মধ্যেও এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর কোথায় যাচ্ছে তার কোনো হিসাবও মিলছে না।
রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইকচালক সংগ্রাম পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় এই সংখ্যা ১২ লাখের বেশি। এর মধ্যে ১০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা, বাকি ২ লাখ ইজিবাইক। সরকার ব্যাটারি তৈরি, আমদানি ও বিক্রির অনুমতি দিয়েছে। এতে সরকার ট্যাক্স পেয়েছে, ব্যবসায়ীরা পেয়েছেন মুনাফা। কিন্তু সমস্যায় ভুগছেন শ্রমজীবী চালকরা। এ যানবাহনের যন্ত্রাংশ বৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে। তাহলে ব্যাটারিচালিত যানবাহন রাস্তায় চললে তা অবৈধ হবে কেন, এ প্রশ্ন অটোরিক্সা চালকদের।
বিশ্লেষকদের মতে, একটি রিকশা প্রতিদিন চার্জ বাবদ খরচ করছে পাঁচ ইউনিট বিদ্যুৎ। এই বিদ্যুৎ দিয়ে লম্বা সময় চলতে পারত একটি ছোট পরিবার।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তথ্য বলছে,সারা দেশে ৬০ লাখের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আছে। রাজধানীতে আছে প্রায় ১২ লাখ। প্রতিটি রিকশায় বৈধভাবে চার্জ দেওয়ার জন্য মাসে বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় হয়। তিনি বলেন, এসব রিকশা অলিগলিতে চলে। তবে মূল সড়কে উঠলেই ডাম্পিং করা হয়। তাছাড়া ডিএমপি একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অবৈধ গ্যারেজ বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এবিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলছেন, আদালতের নিয়ম মেনে এদেরকে উচ্ছেদে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন তারা। তবে বিকল্প কোন উপায়ে ভিন্ন কোথাও তাদের কাজের সুযোগ দেয়া যায় কিনা সেটিও বিবেচনার কথা জানান সিটি মেয়র।
Leave a Reply