অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভিয়েনায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ক আলোচনায় রাশিয়ার আলোচনাকারী দলের প্রধান “মিখাইল উলিয়ানভ” একটি টুইট বার্তা দিয়েছেন। ওই বার্তায় তিনি লিখেছেন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার নজরদারি কমানোর কারণ যুক্তরাষ্ট্র।
সিএনএন-এর সাথে রাফায়েল গ্রোসির এক সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ তুলে ধরে উলিয়ানভ লিখেছেন: মার্কিন নীতির কারণেই ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর আইএইএ’র নজরদারির মাত্রা কমেছে। এই সত্য ‘অনস্বীকার্য তথ্য’ দিয়ে প্রমাণ করা যেতে পারে। সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেছেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর আইএইএ’র নজরদারি কমে গেছে এবং সময়ের পরিক্রমায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
গত ৮ জুন ২০২২ তারিখে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার নির্বাহী পরিষদে ইরান-বিরোধী প্রস্তাব অনুমোদনের পর ইরান এই সংস্থার সাথে শুধুমাত্র সদিচ্ছার ভিত্তিতে করা কিছু সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়।
নির্বাহী পরিষদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে পশ্চিমারা ইরানের তিনটি অঘোষিত স্থানে পারমাণবিক উপাদান আবিষ্কারের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের এই দাবী ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। ওই মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সাথে ইরানের পূর্ণ সহযোগিতার দাবি তোলে এবং ইরানকে অবিলম্বে আইনগত বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে বলে। কোনোরকম বিলম্ব না করে পরমাণু বিষয়ক অবশিষ্ট বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্তএই সংস্থার মহাপরিচালকের প্রস্তাব মেনে চলতে বলা হয়।
এ প্রসঙ্গে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি বলেছেন: আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার ক্যামেরায় রেকর্ড করা ছবিগুলির অ্যাক্সেস পরমাণু সমঝোতার পরিণতির ওপর নির্ভর করছে।
ইরানের ওই জবাবের পর আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা ১৭ নভেম্বর২০২২ তরিখে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে আরেকটি প্রস্তাব পাস করে। ওই প্রস্তাবে আমেরিকা এবং তাদের তিন ইউরোপীয় মিত্রের তীব্র রাজনৈতিক চাপ ছিল। ইরান যে সময় তাদের প্রশ্নবিদ্ধ ৩টি পরমাণু স্থাপনা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার পরিদর্শকদের তদন্ত করতে দিতে সম্মত হয়েছিল ঠিক সে সময় ওই প্রস্তাব পাশ করা হয়েছিল। আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমারা যেহেতু ইরানের সদিচ্ছাকে স্বাগত জানানোর পরিবর্তে নির্বাহী পরিষদে আরেকটি প্রস্তাব পাস করলো ইরানও তাই স্বেচ্ছায় সহযোগিতার চিন্তা থেকে সরে এলো। কেননা ইরানের বিরুদ্ধে তাদের ওই প্রস্তাব পাসের উদ্দেশ্য ছিল বিদ্বেষপূর্ণ।
আমেরিকা আসলে চায় না পরমাণু সমঝোতায় ফিরে যেতে। কেননা হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন: ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি এই মুহূর্তে বাইডেন প্রশাসনের অগ্রাধিকার নয়। চীনের পাশাপাশি রাশিয়াও তাই বলেছে পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা কমানোর কারণ আমেরিকা।
Leave a Reply