অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইতালির দক্ষিণ উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬০ জন হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি শিশুও রয়েছে। এ ঘটনায় আরো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। নৌকাটিতে ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে ইতালি বা ইউরোপের পথে নেয়া হচ্ছিল।
স্থানীয় সময় গতকাল (রোববার) সকালে ইতালির কালাব্রিয়া অঞ্চলের কাতরো শহরের উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ইতালির কোস্টগার্ড ও পুলিশ। ওই নৌকা ডুবে যাওয়ার পর অন্তত ৮১ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
এর আগে ইতালির কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, নৌকাটিতে দেড় শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। নৌকাডুবির পর কয়েকজন সাঁতরে উপকূলে পৌঁছান। ডুবে যাওয়ার সময় নৌকাটি উপকূল থেকে কয়েক মিটার দূরে ছিল। ইতালির সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, নৌকা ডুবে কয়েক মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ানদোসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় এখনো অন্তত ৩০ জন নিখোঁজ। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।
কাতরো শহরের মেয়র অ্যান্তোনিও সিরাসো স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, সমুদ্রে ঝোড়ো আবহাওয়ার কারণে কাঠের তৈরি নৌকাটি ডুবে যায়। নৌকার বিচ্ছিন্ন অংশ উপকূল থেকে ৩০০ মিটারের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।
ওই নৌকায় থাকা আরোহীদের সবাই ইউরোপে অভিবাসনের আশায় বেরিয়েছিলেন। তবে তাঁরা কোন কোন দেশের নাগরিক, তা ইতালির সরকার জানায়নি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, নৌকার আরোহীরা ইরাক, সিরিয়া, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নাগরিক।
প্রাণঘাতী এ দুর্ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। সমুদ্রে মৃত্যু ঠেকাতে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে অভিবাসীদের আগমন বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন তিনি। গত অক্টোবরে ক্ষমতায় আসার পর মেলোনির কট্টর ডানপন্থী সরকার অভিবাসী-বিরোধী কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশের প্রধান পথ ইতালি। ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে যাওয়ার এ পথকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পথ বলা হয়ে থাকে। ২০১৪ থেকে এ পর্যন্ত এ পথে ২০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।
এদিকে, ইতালির কালাব্রিয়া অঞ্চলের উপকূলে কমপক্ষে ৫৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যুর পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিবাসন সংক্রান্ত আইন সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন।
গতকাল কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন্ডার লিয়েন তার টুইটার অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে বলেন, “দুঃখজনক এই মৃত্যু আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। মধ্য ভূমধ্যসাগরে অভিবাসন ও উদ্বাস্তু সম্পর্কিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে।”
Leave a Reply