22 Jan 2025, 11:02 am

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আজ রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করার জন্য আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ।

বিকেলে কিশোরগঞ্জে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে। তবে রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে আইনজীবীদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে”।
‘আইন পেশাকে’ একটি মহৎ পেশা হিসেবে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, আইনি সেবা নিতে এসে সাধারণ মানুষ যেন আইনজীবীদের আচরণে কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি হামিদ কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে  দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
এর আগে তিনি কিশোরগঞ্জে নবনির্মিত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্থাপিত “বঙ্গবন্ধু কর্নার” পরিদর্শন করেন।
রাষ্ট্রপতি এসময় আদালত চত্বরে একটি গাছের চারা রোপন করেন।
পরে, রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ সময় সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সায়েদুর রহমান খান কিশোরগঞ্জের বিচার বিভাগের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।
জনগণ যেন দ্রুত ন্যায় বিচার পায় তা নিশ্চিত করতে বিচারকদের আরও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি ।
জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে বিচারকগণ কিশোরগঞ্জে একটি বিদ্যুৎ আদালত স্থাপনের দাবি জানান।

রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করার জন্য আইনজীবীদের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : একটা চাকরির খুব দরকার ছিল। কিন্তু এত সহজে শুধুমাত্র আবেদন ফি দিয়ে পুলিশের চাকরি পেয়ে যাব, তা কখনো ভাবিনি। বাবা নেই, সংসার সামলাতে মায়ের কষ্ট খুব কাছ থেকে দেখেছি। টিউশনি করে নিজের পড়ালেখা করেছি। এখন পুলিশে চাকরি পেয়েছি, আম্মুকে আর কষ্ট করতে দেব না।’
বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল পদে নির্বাচিত হয়ে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের মৃত সিরাজুল ইসলামের সন্তান সাজিদুল ইসলাম চৌধুরী সিহাব (১৮)। ফেনীতে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষায় নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৪৭ জন তরুণ ও ৮ জন তরুণীসহ মোট ৫৫ জন এ পদে  চূুড়ান্তÍ ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পরীক্ষায় জেলা থেকে মাত্র ১০৪ টাকা ফি দিয়ে ১ হাজার ৪৩৪ জন প্রার্থী অনলাইনে আবেদন করেন। যার মধ্যে শারীরিক পরীক্ষায় অংশ নেন ১ হাজার ১২৩ জন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে তিনটি ধাপ পেরিয়ে লিখিত পরীক্ষায় জন্য মনোনীত হন ৩৭৩ জন। যার মধ্যে ৩৭২ জন পরীক্ষায় অংশ নেন এবং ১৭৮ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। চূড়ান্ত ফলাফলে ৫৫ জনকে কনস্টেবল পদের জন্য নির্বাচিত করা হয়।
চাকরি পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সাজিদ বলেন, ২০১৪ সালে অসুস্থজনিত কারণে বাবা মারা যায়। তখন আমি অনেক ছোট ছিলাম। আমার আরও দুই ভাই রয়েছে। পারিবারিক খরচসহ আমাদের পড়ালেখা নানাদের সহযোগিতায় আমার মা কষ্ট করে চালিয়েছেন। পড়ালেখার জন্য টিউশনি করেছি, কষ্ট করে পড়েছি। খুব আশায় ছিলাম একটা চাকরির জন্য৷ এসএসসি পরীক্ষায় পাস করার পর সহজেই চাকরি পেয়েছি।
ছেলের সফলতা দেখে সাজিদুল ইসলামের মা সোনিয়া বেগম বলেন, কষ্ট করে ছেলেকে বড় করেছি। সে নিজেও অনেক কষ্ট করেছে। পরিবারের অন্য কোন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নেই। ছেলে চাকরি পেয়েছে এতেই আমি অনেক খুশি। ওর বাবা মারা যাওয়ার আগে অনেক কষ্ট করেছে। আজ তিনি থাকলে আরও বেশী খুশী হতেন।  কনস্টেবল পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মিজানুর রহমানের ছেলে আরিফুর রহমান। চাকরি পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাবা দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে রয়েছেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ। এখন আমি চাকরি পেয়েছি, তিনি নিশ্চিন্তে দেশে আসতে পারবেন। আমি খুশি। এত অল্প টাকায় শুধুমাত্র আবেদন ফি খরচ করেই চাকরী পেয়েছি। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে পারব, দেশের সেবায় কাজ করতে পারব। এটি ভালো লাগছে।
পুলিশ বিভাগ সূত্র জানায়, পুরুষদের মধ্যে সাধারণ কোটায় ২৬ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১৪ জন, আনসার ভিডিপি কোটায় ২ জন এবং পুলিশ পোষ্য কোটায় ৫ জন নির্বাচিত হয়েছেন এবং নারীদের মধ্যে সাধারণ কোটায় নারী ৬ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১ জন, পুলিশ পোষ্য কোটায় ১ জনকে নির্বাচন করা হয়েছে। নির্বাচিত হওয়া এসব তরুণ-তরুণীদেও ফ্রি মেডিকেলের জন্য ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ লাইনে পাঠানো হবে। এরপর কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের ছয় মাসের জন্য প্রশিক্ষণে পাঠানো হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের চাকুরীতে নিয়োগ প্রদান করা হবে।
আত্মতৃপ্তির কথা বললেন পুলিশ সুপার : নিয়োগ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নিজেকে আত্মতৃপ্ত বলেছেন পুলিশ সুপার জাকির হাসান। তিনি বলেন, আমি খুবই উৎফুল্ল। বেছে বেছে ৫৫ জন মেধাবী মুখ বাংলাদেশ পুলিশের জন্য নিয়োগ করতে পেরেছি। পুলিশ সুপার হিসেবে এটি আমার জন্য প্রথম নিয়োগ কার্যক্রম যা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। সরকারের জন্য মেধাবী ও দক্ষ পুলিশ জনবল নিশ্চিত করতে পেরেছি এতে আমার ভালো লাগছে।
নিয়োগের বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ সদস্য নিয়োগের প্রক্রিয়া অনেক বেশি স্বচ্ছ হয়েছে। অনেক কৌশলে সুন্দরভাবে নিয়োগগুলো হয়। এখন পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষায় ভালো করলে বেশি সুযোগ পাচ্ছে। যার ফলে মেধাবীদের মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে।
তিনি বলেন, কনস্টেবল নিয়োগের ক্ষেত্রে শারীরিক সক্ষমতার প্রয়োজন রয়েছে। মেধাবীদের নেওয়ার ফলে দ্রুত পুলিশের বিভিন্ন কৌশল ও পাঠগুলো আয়ত্ত করতে পারবে। এতে করে আগের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ পুলিশ বিভাগ গড়ে উঠবে। ভবিষ্যতের পুলিশ অনেক বেশি শক্তিশালী হবে।

 

 

 

১০৪ টাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেলেন ফেনীর ৫৫ যুবক