16 Feb 2025, 09:47 am

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নবনির্বাচিত মাকিন প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক ঘোষণাতেই দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন তিন দেশের নেতারা।

সম্প্রতি ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি দুই ঘনিষ্ট প্রতিবেশি রাষ্ট্র কানাডা ও মেক্সিকোসহ চীনের রপ্তানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। তার এই ঘোষণার সাথে তিনটি দেশই তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

এএফপি আজ এই খবর জানায়।

চীন ইতোমধ্যে রপ্তানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। একইভাবে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লোদিয়া শেইনবাউম ও অর্থমন্ত্রী এব্রার্ড পাল্টা শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পাম বিচে পৌঁছেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো বলেছে, তিনি নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার মার-এ-লোগো বিলাসবহুল এস্টেটে বৈঠক করবেন।

এদিকে কানাডিয়ান সরকারি সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ সিবিসি জানিয়েছে, ট্রুডোর সঙ্গে তার জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্ক ও রয়েছেন। ট্রুডো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নিবেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে তার অঘোষিত সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

ট্রাম্প গত সোমবার কানাডাজুডে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দঃখজনক বার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি যখন প্রতিবেশি কানাডা ও মেক্সিকো এবং চীনের বিরুদ্ধে আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেন, তখন তিন দেশেই অনেকটা বিনা মেঘে বজ্রপাত শুরু হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে কানাডার রপ্তানির পরিমাণ তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি। যার পরিমাণ ৪শ’ ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কানাডার রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর নির্ভর করছে প্রায় ২০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান।

এদিকে এএফপি’র একটি সূত্র জানিয়েছে,কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা করছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন এই ধরনের বিবৃতি দেন. তখন তিনি সেগুলো বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেন।’ ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

শুল্কারোপের হুমকিতে ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাত করতে যুক্তরাষ্ট্রে জাস্টিন ট্রুডো

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত আমদানি শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে বলে সতর্ক করেছে মেক্সিকো।

গত ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লোদিয়া শেইনবাউম এবং অর্থমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ড এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শেইনবাউম বলেছেন,যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্ক আরোপ করে, তাহলে মেক্সিকোও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন,ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই চীন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তারই জবাবে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।

অর্থমন্ত্রী এব্রার্ড বলেছেন,নতুন এই শুল্কযুদ্ধ মার্কিন কর্মীদের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলবে। মেক্সিকোতে উৎপাদিত গাড়ি নির্মাতাদের পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪ লাখ মানুষ চাকরি হারাবে।

শুধু কর্মসংস্থানই নয়, ভোক্তাদের ওপরও এই শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব পড়বে বলে মেক্সিকান অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ পিকআপ, ট্রাক মেক্সিকোতে তৈরি হয় উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক আরোপ করা হলে প্রতিটি গাড়ির দাম তিন হাজার ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ‘নিজের পাঁয়ে কুড়াল মারার মতো অবস্থা হবে’ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

গত সোমবার ট্রাম্প বলেছেন, হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি তিন দেশের পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করবেন। অবৈধ অভিবাসন এবং মাদক পাচার রোধে ব্যর্থতার জন্য তিনি এমন পদক্ষেপ নিবেন বলে জানিয়েছেন। তার দাবি এর ফলে মার্কিন উৎপাদন শিল্প আরো শক্তিশালী হবে।

অবশ্য অর্থনীতিবিদরা ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লোদিয়া শেইনবাউম জানিয়েছেন,বিষয়টি নিয়ে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

অপরদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইতোমধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং দুই দেশের দীর্ঘ দিনের সম্পর্কেও ওপর গুরত্বারোপ করেছেন।

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্কারোপে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে ৪ লক্ষ মার্কিন নাগরীক

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে কর্মরত বহুজাতিক কোম্পানিসমূহের শীর্ষ নির্বাহীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরার পাশাপাশি বিদ্যমান ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এক টিমের সদস্য হিসেবে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা দেশের জন্য একটি টিম’।

তিনি শীর্ষ নির্বাহীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা দেশের র্ব্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়ে উঠুন, যা সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আসতে উৎসাহিত করবে।’

মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে কর্মরত বহুজাতিক কোম্পানিসমূহের আবাসিক প্রধানদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান।

শীর্ষ নির্বাহীগণ বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেন।

এসময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।

ব্যবসায়ী নেতারা সরকারের কাছে লাইসেন্সিং এবং করহার ও করনীতির পূর্বানুমেয়তা নিশ্চিত করা, সহজে ব্যবসা করার পরিবেশ উন্নত করা, বিডার ওয়ান-স্টপ সার্ভিস আরও কার্যকর এবং ক্রেডিট রেটিং উন্নত করার আহ্বান জানান।

তারা বলেন, এগুলো করা গেলে বিনিয়োগকারীরা তখন বাংলাদেশে আসতে উৎসাহিত হবে।

ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ শ্রম অধিকার সংস্কারের জন্য সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং এক্ষেত্রে তাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

প্রধান উপদেষ্টা নির্বাহীগণকে ব্যবসা পরিচালনায় স্বচ্ছতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ব্যবসা পরিচালনায় যেসব সমস্যা রয়েছে তা চিহ্নিত করতে সাহায্য করুন যাতে আমরা সেগুলোর সমাধান করতে পারি’।

লুৎফে সিদ্দিকী প্রধান নির্বাহীকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মানদণ্ড হিসেবে অভিহিত করেন।

তিনি বলেন, ‘আগে সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বিশ্বাসের ঘাটতি ছিল। আমাদের সেটি দূর করতে হবে’।

আশিক চৌধুরী জানান, ব্যবসায় কার্যক্রম সহজ করতে বিডায় রিলেশনশিপ ম্যানেজার পদ চালু করা হচ্ছে।

আশিক চৌধুরী আরও জানান, তিনি এবং বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী আগামী মাসে সিঙ্গাপুরে গিয়ে রেটিং এজেন্সিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই ব্যবস্থা ব্যবসা পরিচালনা উল্লেখযোগ্যভাবে সহজ করে দিবে।

বৈঠকে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার, শেভরন বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এরিক এম. ওয়াকার, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান, হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন লিমিটেডের (এইচএসবিসি) সিইও মো. মাহবুব উর রহমান, মেটলাইফ বাংলাদেশের সিইও মুহাম্মদ আলাউদ্দিন আহমদ, এসজিএস বাংলাদেশ লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুর রশিদ, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এম. এইচ. এম. ফাইরোজ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসির সিইও নাজিথ মীওয়ানাজ, ওরাকল বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রুবাবা দৌলা, মারুবেনি কর্পোরেশনের কান্ট্রি হেড মনাবু সুগাওয়ারা, বারাকা পাওয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফয়সল আহমেদ চৌধুরী, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী, ডিএইচএল ওয়ার্ল্ডওয়াইড এক্সপ্রেস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিয়ারুল হক এবং ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের কান্ট্রি হেড সুমিতাভ বসু উপস্থিত ছিলেন।

সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের