18 May 2024, 10:21 am

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় স্থলযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

ফিলিস্তিনের হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় ইসরায়েল ১৯ দিন ধরে বোমা হামলা চালিয়ে আসছে। গাজায় চলছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। এই হামলা বন্ধে ব্যাপক আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও বুধবার এক টেলিভিশন ভাষণে নেতানিয়াহু এই কথা বলেন।

হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিকভাবে বড়ো ধরনের হামলা চালায়। এর প্রেক্ষিতে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল এখনও শোকার্ত এবং ক্ষুব্ধ। আমরা আমাদের অস্তিত্বের জন্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।

কিন্তু ইসরায়েলের অব্যাহত বোমাবর্ষণের প্রেক্ষিতে গাজায় তীব্র মানবিক সংকটের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্যান্য বিদেশি নেতৃবৃন্দ গাজায় নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার এবং যুদ্ধের নিয়মনীতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।

বাইডেন বুধবার বলেছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে সুপারিশ করছেন গাজায় স্থলযুদ্ধের আগে ইসরায়েলের জিম্মিদের বের করে আনতে হবে।

তিনি বলেন, এটা তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমি তা চাচ্ছি না।

এদিকে বাইডেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষার জন্যে আরও অর্থ বরাদ্দে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ সতর্ক করে বলেছেন, বড়ো ধরনের হামলার কারণে বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকি আরও বাড়বে যা হবে মারাত্মক ভুল।

হামাসের ওপর নারকীয় গোলাবর্ষণ এবং হাজার হাজার যোদ্ধাকে হত্যার জন্যে গর্বিত নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে নির্মূলে এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে কখন স্থলযুদ্ধ শুরু করা হবে তা তার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এবং সামরিক বাহিনী নির্ধারণ করবে।

তিনি বলেন, কখন কীভাবে স্থল অভিযান শুরু হবে তা আমি বলব না।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে ছয় হাজার পাঁচশ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে দুই হাজারেরও বেশি নারী ও শিশু রয়েছে। আহত হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি শিশু।

গাজায় স্থলযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল : প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে ফিলিস্তিনিরা যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে তাতে আমার কোনো আস্থা নেই। গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছে ৬ হাজার ৫০০ জন। তবে কেন তিনি ফিলিস্তিনিদের নিহতের পরিসংখ্যান নিয়ে সন্দিহান তার কারণ বলেননি।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বুধবার ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসের রোজ বাগানে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৬,৫০০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে।

এদিকে ১৭ অক্টোবর গাজার আল-আহলি আরাবি হাসপাতালে হামলার পর গাজা কর্তৃপক্ষের দেওয়া ৪৭১ জন নিহতের সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। সেখানে নিহতের সংখ্যা ১০০ থেকে ৩০০ জনের মধ্যে বলে তাদের দাবি।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় শিশুসহ ৭৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তারা বলছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর নির্বিচার হামলায় একদিনে সর্বোচ্চ ফিলিস্তিনির মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। ১৯ দিন ধরে চলা এই যুদ্ধে আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ৪৩৯ ফিলিস্তিনি। এর আগে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় একদিনে সর্বোচ্চ ৭০৪ জনের প্রাণহানির ঘটনার রেকর্ড হয়েছিল সোমবার।

অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ৪০৫ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ৩০৮ সৈন্য ও ৫৮ পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। এছাড়া হামাসের অব্যাহত হামলায় ইসরায়েলে আহত হয়েছেন আরও ৫ হাজারের বেশি মানুষ।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজার প্রায় ৩০ শতাংশ হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। এসব হাসপাতালে আহত ও মুমূর্ষু রোগীদের আর চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ (১২টি) এবং ৭২টি স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকের প্রায় দুই তৃতীয়াংশই (৪৬টি) বন্ধ হয়ে গেছে। সূত্র : আলজাজিরা

 

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে সন্দিহান মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা বাইডেন