22 Dec 2024, 05:46 pm

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ যখন ব্যর্থ হওয়ায় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর প্রতিনিধিদের আলোচনায় তীব্র বাক-বিতন্ডা সৃষ্টি হয়।

নিরাপত্তা পরিষদে মোট চারটি প্রস্তাব দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ভেটোর মাধ্যমে বাতিল হওয়ায় বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদে গভীর বিভাজন সৃষ্টি করে। খবর এএফপি’র।

তবে আরব দেশগুলো আশা করছে, সাধারণ পরিষদে কোনো দেশের ভেটো প্রয়োগের সুযোগ না থাকায় এবং যে কোনো প্রস্তাব পাশ করার ক্ষেত্রে সে ধরনের কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকায় ভিন্নভাবে পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ থাকবে।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি ২২টি আরব দেশের পক্ষে বক্তৃতা দেন। বৃহস্পতিবার  হামলায় অব্যাহত থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি ইসরায়েলের প্রতি ‘গাজাকে পৃথিবীর চিরস্থায়ী নরকে পরিণত করার’ অভিযোগ তোলেন।

এই যুদ্ধের ‘পরিণতি আগামী প্রজন্মকে তাড়িত করবে,’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘আত্মরক্ষার অধিকার হত্যার লাইসেন্স নয়। সম্মিলিত শাস্তি আত্মরক্ষা নয় বরং একটি যুদ্ধাপরাধ।’
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১৫শ’ লোক নিহত ও ২শ’ জনেরও  বেশি অপহৃত হয়েছে। এদিকে ফিলিস্তিনের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল বিরামহীন বোমাবর্ষণ চালিয়ে যায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলি হামলায় ৭,০৫০ এরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সৈন্যরা যদি ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে স্থল অভিযান শুরু তাহলে মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর বলেন, ‘এই পাগলামি বন্ধ করতে আপনাদের পক্ষে কিছু করার গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ রয়েছে।’ তিনি প্রতিহিংসার পরিবর্তে ন্যায়বিচারের পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানান।
মূলত মানবিক পরিস্থিতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে গাজা উপত্যকায় ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি’ এবং ‘অবাধে ত্রান-সামগ্রীর প্রবেশাধিকার’ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে জর্ডান একটি খসড়া প্রস্তাব উন্থাপন করেছে। শুক্রবার প্রস্তাবটির ওপর ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে। জর্ডানের খসড়া প্রস্তাবটিতে হামাসের হামলার কথা উল্লেখ না করে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করার সব পক্ষকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান প্রস্তাবটি নিয়ে ক্ষুদ্ধ হন। তিনি  প্রস্তাবের খসড়াকারীরা শান্তির বিষয়ে উদ্বিগ্ন বলে দাবি করে বলেন, এই যুদ্ধের সূচনাকারী নিকৃষ্ট খুনিদের কথা প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়নি।

 

জাতিসংঘে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে তুমুল হট্রগোল ; বাক-বিতন্ডা

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় স্থলযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

ফিলিস্তিনের হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় ইসরায়েল ১৯ দিন ধরে বোমা হামলা চালিয়ে আসছে। গাজায় চলছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। এই হামলা বন্ধে ব্যাপক আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও বুধবার এক টেলিভিশন ভাষণে নেতানিয়াহু এই কথা বলেন।

হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিকভাবে বড়ো ধরনের হামলা চালায়। এর প্রেক্ষিতে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল এখনও শোকার্ত এবং ক্ষুব্ধ। আমরা আমাদের অস্তিত্বের জন্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।

কিন্তু ইসরায়েলের অব্যাহত বোমাবর্ষণের প্রেক্ষিতে গাজায় তীব্র মানবিক সংকটের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্যান্য বিদেশি নেতৃবৃন্দ গাজায় নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার এবং যুদ্ধের নিয়মনীতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।

বাইডেন বুধবার বলেছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে সুপারিশ করছেন গাজায় স্থলযুদ্ধের আগে ইসরায়েলের জিম্মিদের বের করে আনতে হবে।

তিনি বলেন, এটা তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমি তা চাচ্ছি না।

এদিকে বাইডেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষার জন্যে আরও অর্থ বরাদ্দে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ সতর্ক করে বলেছেন, বড়ো ধরনের হামলার কারণে বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকি আরও বাড়বে যা হবে মারাত্মক ভুল।

হামাসের ওপর নারকীয় গোলাবর্ষণ এবং হাজার হাজার যোদ্ধাকে হত্যার জন্যে গর্বিত নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে নির্মূলে এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে কখন স্থলযুদ্ধ শুরু করা হবে তা তার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এবং সামরিক বাহিনী নির্ধারণ করবে।

তিনি বলেন, কখন কীভাবে স্থল অভিযান শুরু হবে তা আমি বলব না।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে ছয় হাজার পাঁচশ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে দুই হাজারেরও বেশি নারী ও শিশু রয়েছে। আহত হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি শিশু।

গাজায় স্থলযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল : প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু