23 Feb 2025, 02:42 am

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। শনিবার (২৮ অক্টোবর) তিনি বলেছেন, এই পর্যায়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ দীর্ঘ ও কঠিন হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে জাতির উদ্দেশে বলেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এটি আমাদের দেশের জন্য ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ’। তিনি আরও বলেন, এই অভিযান সহজ নয়। এই মিশন দীর্ঘস্থায়ী ও কঠিন হবে। আমরা প্রস্তুত।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়। এ পর্যায়ে আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার। আমরা হামাসকে এবং তার সামরিক সক্ষমতাকে ধ্বংস করবো। জিম্মিদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলা অব্যাহত রয়েছে। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে নেতানিয়াহুও বলেছেন, গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি কমান্ডার ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

এ দিকে উড়োজাহাজ থেকে লিফলেট ফেলে গাজাবাসীকে সতর্ক করেছে ইসরায়েল। লিফলেটে বলা হয়েছে, উত্তর গাজা এখন যুদ্ধক্ষেত্র, আপনারা সবাই দক্ষিণ গাজায় চলে যান।

তবে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, ইসরায়েলি বোমা বর্ষণ থেকে দক্ষিণ গাজাও নিরাপদ নয়। নিয়মিত অঞ্চলটিতে হামলা করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

ত্রাণ সংস্থাগুলোও বলেছে, গাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের জন্য নিরাপদ কোনও স্থান নেই।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। অপর দিকে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।

 

 

 

 

 

 

 

গাজা যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় আরও কঠিন হবে : নেতানিয়াহু

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিতস

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা মার্টিন গ্রিফিতস বলেছেন, মানবতার একটি অংশের অকাট্য অধিকার রক্ষা করতে গোটা বিশ্ব ব্যর্থ হচ্ছে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর দখলদার ইসরাইল যখন নিরবচ্ছিন্নভাবে পাশবিক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তখন তিনি এ মন্তব্য করলেন।

একটি এক্স পোস্টে গ্রিফিতস আরো বলেন, ইসরাইলের বোমাববর্ষণের ২০তম দিনে ওই হামলা আরো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এবং গাজার যেসব এলাকাকে তুলনামূলক নিরাপদ মনে করা হচ্ছিল সেবসব জায়গায়ও বোমাবর্ষণ চলছে।

জাতিসংঘের মানবিক প্রধান গ্রিফিথস বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সাহায্য খুব কষ্টে গাজায় ঢুকছে। তিনি বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই সুরক্ষিত থাকতে হবে এবং তাদের বেঁচে থাকার জন্য যা যা প্রয়োজন তা অবশ্যই থাকতে হবে।

জাতিসংঘের এই পদস্থ কর্মকর্তা এমন সময় এসব কথা বললেন যখন অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নারকীয় হামলায় প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে লাশের সারি, আহতদের আর্তনাদ। গতকাল (বৃহস্পতিবার) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সর্বশেষ পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছে, উপত্যকাটিতে ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের অব্যাহত বোমা হামলায় ৭ হাজার ২৮ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে শিশু ২ হাজার ৯১৩টি, নারী ১ হাজার ৭০৯ জন এবং বৃদ্ধ ৩৯৭ জন। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৫০০ জন।

২০ দিন ধরে অবিরাম বোমাবর্ষণে গাজায় দুই লাখ আবাসিক ইউনিট ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন গাজার গণপূর্তমন্ত্রী মোহাম্মদ জিয়ারা। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বেশি গৃহহীন হয়েছেন। মারা গেছেন ১০১ স্বাস্থ্যকর্মী।

গাজার সর্বত্র জরুরি পণ্যের জন্য হাহাকার চলছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি, খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে ভীষণ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন উপত্যকাটির অধিবাসীরা। এ অবস্থার মধ্যে শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছয় দিনে গাজায় ত্রাণ নিয়ে মাত্র ৭৪টি ট্রাক প্রবেশ করেছে। অথচ সংঘাত শুরুর আগে স্বাভাবিক অবস্থায় উপত্যকাটিতে প্রতিদিন গড়ে ৪৫০ ট্রাক ত্রাণসহায়তা যেত।#

মানবতার একটি অংশের অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে বিশ্ব : জাতিসংঘ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ যখন ব্যর্থ হওয়ায় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর প্রতিনিধিদের আলোচনায় তীব্র বাক-বিতন্ডা সৃষ্টি হয়।

নিরাপত্তা পরিষদে মোট চারটি প্রস্তাব দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ভেটোর মাধ্যমে বাতিল হওয়ায় বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদে গভীর বিভাজন সৃষ্টি করে। খবর এএফপি’র।

তবে আরব দেশগুলো আশা করছে, সাধারণ পরিষদে কোনো দেশের ভেটো প্রয়োগের সুযোগ না থাকায় এবং যে কোনো প্রস্তাব পাশ করার ক্ষেত্রে সে ধরনের কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকায় ভিন্নভাবে পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ থাকবে।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি ২২টি আরব দেশের পক্ষে বক্তৃতা দেন। বৃহস্পতিবার  হামলায় অব্যাহত থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি ইসরায়েলের প্রতি ‘গাজাকে পৃথিবীর চিরস্থায়ী নরকে পরিণত করার’ অভিযোগ তোলেন।

এই যুদ্ধের ‘পরিণতি আগামী প্রজন্মকে তাড়িত করবে,’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘আত্মরক্ষার অধিকার হত্যার লাইসেন্স নয়। সম্মিলিত শাস্তি আত্মরক্ষা নয় বরং একটি যুদ্ধাপরাধ।’
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১৫শ’ লোক নিহত ও ২শ’ জনেরও  বেশি অপহৃত হয়েছে। এদিকে ফিলিস্তিনের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল বিরামহীন বোমাবর্ষণ চালিয়ে যায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলি হামলায় ৭,০৫০ এরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সৈন্যরা যদি ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে স্থল অভিযান শুরু তাহলে মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর বলেন, ‘এই পাগলামি বন্ধ করতে আপনাদের পক্ষে কিছু করার গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ রয়েছে।’ তিনি প্রতিহিংসার পরিবর্তে ন্যায়বিচারের পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানান।
মূলত মানবিক পরিস্থিতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে গাজা উপত্যকায় ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি’ এবং ‘অবাধে ত্রান-সামগ্রীর প্রবেশাধিকার’ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে জর্ডান একটি খসড়া প্রস্তাব উন্থাপন করেছে। শুক্রবার প্রস্তাবটির ওপর ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে। জর্ডানের খসড়া প্রস্তাবটিতে হামাসের হামলার কথা উল্লেখ না করে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করার সব পক্ষকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান প্রস্তাবটি নিয়ে ক্ষুদ্ধ হন। তিনি  প্রস্তাবের খসড়াকারীরা শান্তির বিষয়ে উদ্বিগ্ন বলে দাবি করে বলেন, এই যুদ্ধের সূচনাকারী নিকৃষ্ট খুনিদের কথা প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়নি।

 

জাতিসংঘে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে তুমুল হট্রগোল ; বাক-বিতন্ডা