বামে হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম ও ডানে একজন ফিলিস্তিনিপন্থী রাব্বি
অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ঘোষণা করেছে যে যুদ্ধ-বিরতি বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখা ও বন্দি মুক্তির বিষয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইলের কাছ থেকে নতুন কিছু গ্যারান্টি পেয়েছেন।
যুদ্ধ-বিরতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ইসরাইলের নানা বাধা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেছেন, আমরা এই চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করব এবং যত চাপই আসুক না কেন এতে কোনো ধরনের পরিবর্তন আনতে দিব না। যুদ্ধ-বিরতি চুক্তির সমস্ত পর্যায়গুলো সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়নে হামাস অঙ্গীকারবদ্ধ বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। কাসেম বলেছেন, ইসরাইল অতীতের মতই দীর্ঘসূত্রিতা বা বিলম্ব করার নীতি অব্যাহত রেখেছে, কিন্তু আমরা ইসরাইলকে চুক্তি-মোতাবেক আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি।
ট্রাম্পের গাজা–পরিকল্পনার নিন্দায় ৩৫০ ইহুদি পুরোহিত : গাজাবাসীকে জোর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়ার যে পরিকল্পনর কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন ৩৫০ জনেরও বেশি ইহুদিবাদ-বিরোধী ইহুদি রাব্বি ও সমাজ-কর্মী এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের কাছে পাঠানো এক আবেদন-পত্রে তারা স্বাক্ষর দিয়ে লিখেছেন, ট্রাম্প গাজার সব ফিলিস্তিনিকে জোর করে উচ্ছেদ করতে চান, কিন্তু আমরা ইহুদি জনগণ এই জাতিগত নির্মূল অভিযানের বিরোধী। এ ছাড়াও এই ইহুদি নেতারা ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে বের করে অন্যত্র পাঠানোর ও তাদের বাস্তুচ্যুত করার যে কোনো পরিকল্পনার বিরোধী বলেও ঘোষণা করেছেন।
গাজার ৭০% অবকাঠামো ধ্বংস করেছে ইসরাইল : এদিকে গাজার নগর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র হাস্না মাহনা জানিয়েছেন, এই শহরের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এর ফলে মৌলিক বা প্রধান পরিসেবার ব্যবস্থাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রা খুব কঠিন হয়ে পড়ায় এই শহরে দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন মানবীয় বিপর্যয়। তিনি আরও বলেছেন, গাজায় পানির সংকট দেখা দেয়ায়, পানি বা পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থাগুলো অচল হয়ে পড়ায়, আবর্জনার পাহাড় জমে ওঠায় এবং সড়ক ও মহাসড়ক নেটওয়ার্কগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায়, বিদ্যুত ও জ্বালানী না থাকায় নগর-কর্তৃপক্ষের সেবা দেয়ার ক্ষমতা সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
গাজার নগর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র হাস্না মাহনা আরও বলেছেন, ইসরাইলি সেনারা এখনও গাজায় ভারী যন্ত্রপাতি প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, ফলে দালান-কোঠার ধ্বংসস্তূপ সরানো ও সড়কগুলো খুলে দেয়া সম্ভব হয়নি এবং পরিবহন ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা ও আবাসিক আর বাণিজ্য এলাকাগুলোতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়াও হচ্ছে বিলম্বিত।
পশ্চিম তীরে ৪ ফিলিস্তিনির শাহাদাত : এদিকে পশ্চিম তীরের চার ফিলিস্তিনি যুবক ইসরাইলি হানাদার সেনাদের হাতে শাহাদাত বরণ করেছেন। বুধবার তুলকারাম শহরের উত্তরে একটি ছোট্ট শহরে নুর শামস নামক শরণার্থী শিবিরে তিন ফিলিস্তিনি যুবককে গুলি করে হত্যা করে ইহুদিবাদী সেনারা। ইসরাইলি সেনারা এখনও তাদের লাশ হস্তান্তর করেনি ফিলিস্তিনিদের কাছে। এ ছাড়াও শুক্রবার রাতে পূর্ব নাবলুসে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে আরও এক ফিলিস্তিনি শাহাদত বরণ করেন।
দক্ষিণ লেবাননের কয়েকটি এলাকায় ইসরাইলি হামলা : ওদিকে ইহুদিবাদী ইসরাইল যুদ্ধ-বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে দক্ষিণ লেবাননের কয়েকটি এলাকায় বোমা বর্ষণ করেছে। ইসরাইলের কয়েকটি সাঁজোয়া যান নাবাতিয়া প্রদেশের কোনো কোনো এলাকায় ঢুকে পড়েছে। ইসরাইলি কয়েকটি ড্রোন লেবাননের আকাশে টহল দিয়েছে।
Leave a Reply