22 Jan 2025, 11:05 am

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সিরিয়ায় সেনা অভিযানে ৩ দিনে কমপক্ষে ১ হাজার সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। সিরিয়ার টেলিভিশন গতকাল ওই খবর দিয়েছে।

লেবানন ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর কয়েকটি দেশের মদদে নতুন করে বিদেশী সন্ত্রাসী বাহিনীর আগমন ঘটে। ওই গোষ্ঠী সিরিয়ার উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর অবস্থানে ব্যাপক হামলা চালায়।

যুদ্ধ কক্ষে বাশার আল-আসাদের উপস্থিতি, সিরিয়ার কিছু এলাকা থেকে সন্ত্রাসীদের বিতাড়ন, গত ৩ দিনে প্রায় ১ হাজার সন্ত্রাসীকে হত্যা, হামা’তে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা ড্রোন-লাইন শক্তিশালী করা এবং ইদলিবের পশ্চিমে একটি অতর্কিত হামলায় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার ইত্যাদি সিরিয়ার রণক্ষেত্রের সর্বশেষ কিছু ঘটনা।

যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বাশার আসাদের উপস্থিতি : যুদ্ধকক্ষে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ গতকাল দেশের শীর্ষ সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিশেষ করে উত্তর সিরিয়ার আলেপ্পো প্রদেশ এবং পশ্চিম সিরিয়ার হামায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন।

সিরিয়ান আর্মি: আমরা হামার উপকণ্ঠে সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করেছি : সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে হামার উপকণ্ঠে সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলা করার খবর দিয়েছে।

এই মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে: হামার উত্তর উপকণ্ঠে আমাদের বাহিনীর ইউনিটগুলো তাকফিরি গোষ্ঠিগুলোর মোকাবেলা করেছে এবং যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করেছে।

সিরিয়ার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুক্ত গণমাধ্যমগুলো হামা থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের দাবি করার পর এই বিবৃতি দেওয়া হয়।

সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানা (SANA) সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, উত্তর হামায় সিরিয়ার সেনাবাহিনী শনিবার রাতে বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা শক্তি ব্যাপক বৃদ্ধি করেছে।

এদিকে সিরিয়ার একটি সামরিক সূত্র জানিয়েছে, তাদের সশস্ত্র বাহিনী হামার আল-মাদিক দুর্গ এবং মার্দেস গ্রামসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠিকে বিতাড়িত করেছে এবং ওই এলাকাগুলোর ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।

সিরিয়ায় গত তিন দিনে প্রায় হাজার সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে : সিরিয়ার টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানে গত ৩ দিনে প্রায় ১ হাজার সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

দামেস্কের আল-মায়াদিন নেটওয়ার্কের রিপোর্টার এর আগে জানিয়েছিল সিরিয়া এবং রাশিয়া ইদলিবের দক্ষিণ শহরতলিতে অবস্থিত হাজারিন ও আল-রাকায়া গ্রামে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।

 

ইদলিবের পশ্চিমে সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ ধরা পড়েছে : সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব শহরের উত্তর-পশ্চিমে সন্ত্রাসী গোষ্ঠির সদস্যরা আশ্চর্যজনকভাবে ধরা পড়েছে। ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠির কয়েক ডজন সদস্য নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে প্রচুর।

বার্তা সংস্থা স্পুতনিক জানিয়েছে, সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইদলিবে এক অতর্কিত অভিযানে কমপক্ষে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাকচি সম্প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সাথে এক ফোনালাপে বলেছেন: সিরিয়ায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সাম্প্রতিক গতিবিধি পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং অঅমেরিকার পরিকল্পনার অংশ।

এরইমধ্যে গতকাল গ্রেফতারকৃত এক সন্ত্রাসী স্বীকার করেছে, সন্ত্রাসীদের অস্ত্রশস্ত্রসহ সরবরাহ করাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তুরস্ক। এমনকি তারা প্রত্যেক সন্ত্রাসীকে প্রতিদিন ১০ হাজার লিরা দিচ্ছে। এই স্বীকারোক্তির ভিডিও অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে।

 

সিরিয়ায় সেনা অভিযানে গত ৩ দিনে প্রায় ১ হাজার সন্ত্রাসী নিহত

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  ইরানের ইসলাম বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র সাবেক প্রধান মেজর জেনারেল মোহসেন রেজায়ি বলেছেন, ইসরাইল এবং আমেরিকাকে মোকাবেলা করার জন্য বিশ্বের সমস্ত মুসলিম দেশ মিলে ঐক্যবদ্ধ ও যৌথ সামরিক বাহিনী গঠন করতে হবে।

তিনি বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং আমেরিকা উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসীদেরকে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো শহরে আগ্রাসন চালাতে ও দখল করে নিতে উস্কানি দিয়েছে।

গতকাল (রোববার) আল-জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আইআরজিসি’র সাবেক প্রধান এবং বর্তমানে ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্য মোহসেন রেজায়ি এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “গত বুধবার আকস্মিকভাবে বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা ২০২০ সালে সই হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে যে হামলা চালিয়েছে সেটি মারাত্মক ধরনের রাজনৈতিক ভুল। আমরা মনে করি আলেপ্পো শহর দখলের বিষয়ে আমেরিকা এবং ইসরাইল উস্কানি দিয়েছে।” তিনি বলেন, এই ঘটনা এমন একটি সময় ঘটানো হয়েছে যখন গাজা ও লেবাননে ভয়াবহ আগ্রাসন চালিয়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে ইসরাইল অস্থিতিশীল করে তুলেছে। একই সাথে ইসরাইল সিরিয়ার ওপর দফায় দফায় বিমান হামলা চালিয়েছে।

আল-জাজিরাকে মোহসেন রেজায়ি আরো বলেন, ইসরাইল এবং আমেরিকাকে মোকাবেলা করার জন্য বিশ্বের সমস্ত মুসলিম দেশ মিলে ঐক্যবদ্ধ ও যৌথ সামরিক বাহিনী গঠন করতে হবে।

তিনি বলেন- ফিলিস্তিন, লেবানন, ইয়েমেন, সিরিয়া,  ইরাক এবং ইরান এই ছয় দেশ আমেরিকা ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এবং তারা লেবাননে যেভাবে পরাজিত হয়েছে সেভাবে আমেরিকা এবং ইসরাইলকে পরাজিত করতে হবে। তিনি বলেন, আমেরিকা এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে সমস্ত মুসলিম দেশকে সমর্থনের দিক দিয়ে ইরান হচ্ছে প্রধান দেশ।

ইসরাইল ও আমেরিকাকে মোকাবেলায় মুসলিম দেশগুলোর যৌথ সামরিক বাহিনী গঠন অপরিহার্য