24 Dec 2024, 06:13 pm

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। শনিবার (২৮ অক্টোবর) তিনি বলেছেন, এই পর্যায়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ দীর্ঘ ও কঠিন হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে জাতির উদ্দেশে বলেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এটি আমাদের দেশের জন্য ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ’। তিনি আরও বলেন, এই অভিযান সহজ নয়। এই মিশন দীর্ঘস্থায়ী ও কঠিন হবে। আমরা প্রস্তুত।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়। এ পর্যায়ে আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার। আমরা হামাসকে এবং তার সামরিক সক্ষমতাকে ধ্বংস করবো। জিম্মিদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলা অব্যাহত রয়েছে। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে নেতানিয়াহুও বলেছেন, গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি কমান্ডার ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

এ দিকে উড়োজাহাজ থেকে লিফলেট ফেলে গাজাবাসীকে সতর্ক করেছে ইসরায়েল। লিফলেটে বলা হয়েছে, উত্তর গাজা এখন যুদ্ধক্ষেত্র, আপনারা সবাই দক্ষিণ গাজায় চলে যান।

তবে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, ইসরায়েলি বোমা বর্ষণ থেকে দক্ষিণ গাজাও নিরাপদ নয়। নিয়মিত অঞ্চলটিতে হামলা করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

ত্রাণ সংস্থাগুলোও বলেছে, গাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের জন্য নিরাপদ কোনও স্থান নেই।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। অপর দিকে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।

 

 

 

 

 

 

 

গাজা যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় আরও কঠিন হবে : নেতানিয়াহু

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিতস

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা মার্টিন গ্রিফিতস বলেছেন, মানবতার একটি অংশের অকাট্য অধিকার রক্ষা করতে গোটা বিশ্ব ব্যর্থ হচ্ছে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর দখলদার ইসরাইল যখন নিরবচ্ছিন্নভাবে পাশবিক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তখন তিনি এ মন্তব্য করলেন।

একটি এক্স পোস্টে গ্রিফিতস আরো বলেন, ইসরাইলের বোমাববর্ষণের ২০তম দিনে ওই হামলা আরো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এবং গাজার যেসব এলাকাকে তুলনামূলক নিরাপদ মনে করা হচ্ছিল সেবসব জায়গায়ও বোমাবর্ষণ চলছে।

জাতিসংঘের মানবিক প্রধান গ্রিফিথস বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সাহায্য খুব কষ্টে গাজায় ঢুকছে। তিনি বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই সুরক্ষিত থাকতে হবে এবং তাদের বেঁচে থাকার জন্য যা যা প্রয়োজন তা অবশ্যই থাকতে হবে।

জাতিসংঘের এই পদস্থ কর্মকর্তা এমন সময় এসব কথা বললেন যখন অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নারকীয় হামলায় প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে লাশের সারি, আহতদের আর্তনাদ। গতকাল (বৃহস্পতিবার) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সর্বশেষ পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছে, উপত্যকাটিতে ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের অব্যাহত বোমা হামলায় ৭ হাজার ২৮ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে শিশু ২ হাজার ৯১৩টি, নারী ১ হাজার ৭০৯ জন এবং বৃদ্ধ ৩৯৭ জন। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৫০০ জন।

২০ দিন ধরে অবিরাম বোমাবর্ষণে গাজায় দুই লাখ আবাসিক ইউনিট ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন গাজার গণপূর্তমন্ত্রী মোহাম্মদ জিয়ারা। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বেশি গৃহহীন হয়েছেন। মারা গেছেন ১০১ স্বাস্থ্যকর্মী।

গাজার সর্বত্র জরুরি পণ্যের জন্য হাহাকার চলছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি, খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে ভীষণ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন উপত্যকাটির অধিবাসীরা। এ অবস্থার মধ্যে শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছয় দিনে গাজায় ত্রাণ নিয়ে মাত্র ৭৪টি ট্রাক প্রবেশ করেছে। অথচ সংঘাত শুরুর আগে স্বাভাবিক অবস্থায় উপত্যকাটিতে প্রতিদিন গড়ে ৪৫০ ট্রাক ত্রাণসহায়তা যেত।#

মানবতার একটি অংশের অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে বিশ্ব : জাতিসংঘ