23 Nov 2024, 05:51 pm

এম কবীর, ঝিনাইদহ : লোকলজ্জার কাছে হার মেনেছে মায়ের মমতা। নিজের গর্ভজাত সন্তানকে ঠেলে দেয় মৃত্যুর মুখে- ফেলে যায় নির্জন সড়কের পাশে। শুক্রবার ভোরে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালশার সড়কের পাশ থেকে রক্তমাখা শরীরে জীবিত এক নবজাতককে উদ্ধার করেছে সোনিয়া নামের এক গৃহবধূ।

গৃহবধূ সোনিয়া জানান, ২৭ অক্টোবর ভোর ৬টার দিকে বাবার বাড়ি কুশনা- তালশার সড়কে হাটতে যাই। এসময় সড়কের পাশেই একটি কাপড়ে মোড়ানো রক্তমাখা অবস্থায় ওই নবজাতককে দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যাই। পরে স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নবজাতককে তিনি বাড়িতে নিয়ে যান। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ নবজাতকসহ ওই গৃহবধূকে আসতে বলেন।

সোনিয়া বলেন, গত এক মাস আগে আমার প্রথম বাচ্চা জন্মের পরই মারা যায়। আল্লাহ পাক এই বাচ্চাটিকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন। আমি এই বাচ্চার লালন-পালনের দায়িত্ব নিতে চাই। সোনিয়া উপজেলার কুশনা বাজার পাড়ার রোকন মন্ডলের মেয়ে ও বলুহর রামচন্দ্রপুর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী রানা হামিদের স্ত্রী।

এলাকাবাসী জানায়, অপকর্মের ফসল নিষ্পাপ নবজাতক শিশুটিকে কেউ হয়তো নির্জন জায়গা পেয়ে ফেলে গেছে। সময়মতো নবজাতক শিশুটিকে খুঁজে পাওয়ায় সে প্রাণে বেঁচে গেছে। না হলে হয়তো নবজাতকটি কোন বন্যপ্রাণীর খাবারে পরিণত হতো।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ তারুনি পাশা জানান, সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে সোনিয়া নামে এক গৃহবধূ একদিন বয়সের ওই নবজাতককে নিয়ে আসেন। প্রাথমিকভাবে কোন সমস্যা না থাকায় তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে জানতে পারি নবজাতকটি সড়কের পাশে পড়ে ছিলো।

কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উছেন মে নবজাতক পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের তত্বাবধানে নবজাতককে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি দেয়া হয়েছে। যদি বাবা-মায়ের খোঁজ পাওয়া যায়, তাহলে বাবা-মায়ের কাছেই ফিরিয়ে দেয়া হবে। না, হলে কেউ যদি দত্তক নিতে চায়, তাহলে নিয়মানুযায়ী নবজাতকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে সড়কের পাশ থেকে জীবিত নবজাতক উদ্ধার

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রয়োজনীয় পেশাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষ, যুগোপযোগী ও জনবান্ধব রাজস্ব প্রশাসন গড়ে তুলতে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৪ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়ন এবং নিরলস প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বিশ্বের বিস্ময়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে আমরা দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) বাস্তবায়ন করছি এবং একটি সমৃদ্ধ রাজস্ব ভান্ডার গড়ে তোলার ওপর প্রাধান্য দিচ্ছি। এর সঙ্গে প্রয়োজনীয় পেশাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষ, যুগোপযোগী ও জনবান্ধব রাজস্ব প্রশাসন গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রাজস্ব সম্মেলন’ উপলক্ষ্যে আজ দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘রাজস্ব সম্মেলন-২০২৩’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনে আনন্দিত। একই সময়ে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নবনির্মিত রাজস্ব ভবনের উদ্বোধন হচ্ছে, যা রাজস্ব সম্মেলনকে আরো অর্থবহ এবং স্মরণীয় করে রাখবে। এই শুভক্ষণে তিনি দেশের জনগণ, করদাতা, রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণসহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মহান স্বাধীনতার পর অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ধারাবাহিক উন্নয়নের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭২ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, রাজস্ব আয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই সরকার উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সেবা প্রদানের ব্যয় নির্বাহ করে থাকে। তাই অভ্যন্তরীণ রাজস্ব ব্যবস্থা সুসংহত করার মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পাশাপাশি সরকারি ব্যয় নির্বাহ ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে গতিশীলতা আনয়নে এনবিআরের গুরুত্ব অপরিসীম।
তিনি বলেন,  বাংলাদেশ শীঘ্রই এলডিসি হতে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে এনবিআর রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় আধুনিকীকরণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অংশ হিসেবে ‘লক্ষ্যমাত্রা ১৭.২’ বাস্তবায়নে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজস্ব সম্মেলন’ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একটি চমৎকার উদ্যোগ; একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্রয়াস। এই সম্মেলনের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে পারস্পরিক মতবিনিময় এবং সহযোগিতা সম্প্রসারণের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পাবে। রাজস্ব সম্মেলনের মাধ্যমে কর আহরণে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও চ্যালেঞ্জসমূহ ফুটে উঠবে এবং তা উত্তরণে সংশ্লিষ্ট সকলে সততা, এক্যগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান সংঘাতের ফলে বৈশ্বিকসহ বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নানাবিধ বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এই প্রেক্ষাপটে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আরো উদ্যমী হয়ে কাজ করবে বলে তিনি  আশা করেন। প্রধানমন্ত্রী  ‘রাজস্ব সম্মেলন-২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।

যুগোপযোগী ও জনবান্ধব রাজস্ব প্রশাসন গড়ে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী